বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মমতা নূর

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

চিঠি

মমতা নূর

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

চিঠি

হৃদয়ের গহীনে বাস করা সবটুকু অনুভূতির এক নিখাদ বহিঃপ্রকাশের নাম চিঠি। প্রেম, ভালোবাসা, প্রয়োজন, তাগিদ সবকিছুকে ছাপিয়ে যে কথাটি মোটা দাগে বলা যায় তা হলো চিঠি মানেই অনুভূতি কিংবা অনুভূতির এক শুদ্ধাচার চিঠি।
একটা সময় ছিল মানুষের সমস্ত সুখ-দুঃখ, আবেগ-অনুভূতি, পরিবেশ-পরিস্থিতি সবই প্রকাশ করা হতো চিঠিতে। প্রিয় মানুষের একটা চিঠির জন্য অপেক্ষা দীর্ঘ সময় ধরে। একমাত্র চিঠিই ছিল তখন ভাবনা, উপলব্ধি ও যোগাযোগের পারস্পরিক সেতুবন্ধন।

প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে। মানুষের কষ্ট কমেছে। অপেক্ষার অবসান হতে শুরু করেছে কিন্তু চিঠি আদান-প্রদানের সেই আবেগটুকু ধরে রাখার কোনো ফর্মুলা প্রযুক্তি আমাদেরকে দিতে পারেনি। চাইলেই আমরা এক সেকেন্ডে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে বসে প্রিয় মানুষের সাথে মনঃসংযোগ ঘটাতে পারি।  কিন্তু  ‘প্রযুক্তি মানুষকে দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ’ কথাটি কোনো অংশেই যেনো মিথ্যা নয়। মানুষের আবেগ-অনুভূতির কত বিবর্তন, কত পরিবর্তন! কখনো কি আর আমরা ফিরে পাব হলুদ কিংবা সাদা খামে ভরা চিঠি খোলার সেই মিষ্টি অনুভূতি!

প্রিয় মানুষের হাতে লেখা চিঠির কালো অক্ষরগুলোয় কী মায়া, কী মমতা, কী মোহ, কী জাদু! শুধু চিঠিতে থাকা শব্দের ঘ্রাণ নিয়েই কত মানুষ কত রাত নির্জনে কাটিয়েছে। কত চোখ শুধু শব্দের পর শব্দের গাঁথুনির দিকে তাকিয়ে অশ্রু-সাগর বইয়ে দিয়েছে। চিঠির ভেতর প্রিয় মানুষের হাতের ছোঁয়া গোলাপের  পাপড়ি কিংবা নববধূর চোখের জলভেজা কাজলের চিহ্নে যে আবেগ, মায়া, ভালোবাসা তা আর সৃষ্টির কিছুতেই নেই। কী ভীষণ ব্যাকুলতা কাঙ্খিত ব্যক্তির চিঠির জন্য!

চিঠি সাহিত্যেরও একটা বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘ছিন্নপত্রে’ চিঠির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘পৃথিবীতে অনেক মহামূল্য উপহার আছে, তার মধ্যে সামান্য চিঠিখানি কম জিনিস নয়। চিঠির দ্বারা পৃথিবীতে একটা নতুন আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মানুষকে দেখে যতটা লাভ করি, তার সঙ্গে কথাবার্তা কয়ে যতটা লাভ করি, চিঠিপত্র দ্বারা তার চেয়ে আরো একটু বেশি কিছু পেয়ে থাকি। আমার মনে হয়, যারা চিরকাল অবিচ্ছেদে চব্বিশ ঘণ্টা কাছাকাছি আছে, যাদের মধ্যে চিঠি লেখালেখির অবসর ঘটেনি, তারা পরস্পরকে অসম্পূর্ণ করেই জানে।’

"মহামায়া,
কী ভীষণ মনে পড়ছে তোমাকে! তোমার স্পর্শ অনুভূত হচ্ছে সমস্ত শিরা-উপশিরায়। মনের চৌকাঠ পেরিয়ে স্মৃতিগুলো তোমার আঙিনায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে অন্ধকারে নুইয়ে পড়া নারিকেল গাছের পাতার মত। আর একবার প্রেমে পড়তে চাই তোমার। সদ্য প্রেমে পড়া কিশোরী হয়ে হারিয়ে যেতে চাই তোমার মনের শহরে। সেইসব দিনগুলো ফিরে পেতে চাই যেখানে তোমারি প্রতীক্ষায় জানালায় স্থির হতো অবুঝ চোখজোড়া। শিহরণে পুলকিত হতো বিবশ দেহ-মন।

তোমার ফিরে যাওয়া পথ চেয়ে আজও মনের সুতোয় টান পড়ে। এলোমেলো হয় মস্তিষ্কের ভাবনাগুলো। শিরদাঁড়া বেয়ে তীরতীর করে বয়ে চলা শীতল অনুভূতিগুলো কক্সিসে জমা হয় আবারো প্রাণস্পন্দনের আশায়।
তোমাকে ভুলে থাকার চেষ্টা আমাকে একা করে দেয়। প্রচণ্ড মনোকষ্টে আড়ষ্ট হয় আমার দৈনন্দিন। স্থবির চাঁদ হয়ে চেয়ে থাকি তোমার ওই মুখপানে। তাই তো সুস্থ পৃথিবীতে আবারো মিলনের ভরসা পাই। বেলাশেষে সুখনীড় ভরে উঠবে হাজার ফানুসে সেই প্রত্যাশা বেঁচে থাকার সাধ জাগায়।

তুমি মেঘ হয়ে এসো। আলিঙ্গন করো। ভালোবাসার ওমে ঢেকে দাও সমস্ত নিঃসঙ্গতা...!
                                               ইতি
                                         তোমার মন"
ঠিক এরকমই একটা চিঠির গভীর আবেগ হয়ে ফিরে আসুক মানুষের চিরচেনা দৈনন্দিন। সমস্ত ক্লেশ,জরা মুছে ফেলে হৃদয় পুলকিত হোক
ভালোবাসার আকাঙ্খায়।
মহাদেব সাহা‍‍`র সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে হৃদয়ে বাজুক ‍‍`এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও।‍‍`

মমতা নূর
গল্পকার

আরবি/এস

Link copied!