মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৩:৪৮ এএম

কবির কয়েকটি কবিতা

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৩:৪৮ এএম

কবি নাফিউল হক।   ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কবি নাফিউল হক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নিসর্গপালন

যখন তক্তার পেট ফেটে জন্মায় জলঘড়ি, আমরা দুই ডানা নিয়ে উড়ে যাই পাঁউরুটির ভিতর। অন্ধ পেঁচারা কাঁথায় মুড়ে রাখে গ্রীষ্মের কাগজ। তুমি কি কলাপাতার কালি দিয়ে লিখতে জানো? জানো কি, ডোবার ভিতর ঝিমিয়ে থাকে একেকটি চিৎকারের কচ্ছপ?

ঘড়ির কাঁটা যখন পিছলে পড়ে পিঁপড়ের রাজপথে, তখন মাটির নাভিমূল থেকে উঠে আসে চিনির ডুমুর। সেই ডুমুরের ছায়ায় বসে আমরা বুনবো উলটো মালা। রাত্রি হবে আংশিক কাচের, আংশিক মুরগির ডিম।

তুমি কি আঙুল দিয়ে খোঁচাও বাতাসের জ্বর? তোমার নখ কি গন্ধ তুলে রাখে রাধাচূড়ার গায়ে? আমরা যে কথা বলি না, তা-ই সবচেয়ে বেশি ফোটে— অন্ধরসের গুল্মে, চুপচাপ চুলের ভিতর, ভেসে যাওয়া ছায়া-শিশিরে। শব্দের ঘাড় ভেঙে বয়ে যায় গোরুর গন্ধ। আমাদের হাড়ে যে সুর ছিল, তা পেঁচিয়ে গেছে অচেনা চাবির মতো। তাই তো, সব পেঁচা একদিন খাঁচা বানায় নিজের ফুসফুসে?

আর কেউ যদি জেগে থাকে— সে হয়তো ঘোড়ার চোখে দেখে বৃষ্টি পড়ার পূর্বক্ষণ, আলুপোড়া খেতে খেতে শোনে মাটির অন্ধজন্ম। আর তখনই, ধরলা নদীর নিচে— জন্ম নেয় নিসর্গপালন।

ছায়াসূত্র

ভোরের আঁচলে গুঁজে রেখেছি কিছু তেলচিটে গল্প। একবার কেউ ভুল করে খুলে ফেললে— পাখির ঠোঁট থেকে ঝরে পড়বে ভোরবেলার কান্না। আমি তাকে বলি, ‘আয়, আয় ছায়ার চাতালে।’ সে বলে, ‘আমার চাতাল শুধু হেমন্তে ফোটে।’ সেই থেকে আমি কুলুঙ্গিতে রেখে এসেছি কয়েক ফোঁটা ডানা। চাইলে কেউ কাগজে মুড়ে নিতে পারে, চাইলে খেয়ে ফেলতে পারে দুপুরের হাঁসের মতো। আমি ওদিকে হাঁটি— পায়ের নিচে ফাটলে ওঠে কাচের চাষ।

শব্দটা— ‘মৌপিঁড়ি’— যার মানে কেউ জানে না, শুধু ছায়ারা জানে, আর জানে বৃষ্টি ভেজা ঘুড়ির ঠোঁট। তোমরা কি কখনো রোদে শুকানো মুখে হাসির দাগ চেনো? আমরা চিনি— অক্ষরের গায়ে গায়ে লেগে থাকা হাসির পরাগ।

কেউ একজন বলেছিল— ‘ঘুমিয়ে গেলে আয়না ঘেমে যায়।’ আমি সেই ঘামে দিয়ে দিই রঙ, তাতে ফুটে ওঠে ঘুমিয়ে থাকা শহরের ম্যুরাল।

মৌপিঁড়ি আজকাল কসাইবাজারে মোজা বিক্রি করে আর চুল বেঁধে রাখে ঘাসের দড়িতে। সে নাকি আমার ছায়ার সঙ্গে ফিসফিস করে কথা বলে। আর আমি— চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি একটা কাঁচপাহাড়ের নিচে।

চরণবীজ

ভোরগাঙের হাঁটে ঘুমোয় এক বালুচরস্বর— তার জিভে লেগে থাকে কাদাজল। আমাদের দিনগুলো বাঁশঝাড়ের ছায়ায় ঘষে ফেলে দেয় গায়ের উপাদান, অন্তর্বৃত্তি থেকে উঠে আসে মাংস-মুঠোর মতো কিছু বাসনা। শীতে চিচিঙ্গা কাঁপে না। তখন আমাদের পা-ফুলে জন্ম নেয় ‘চরণবীজ’, যা দিয়ে হেঁটে যাই রক্তের আগ্নেয়গিরিতে।

তুমি কি জেনেছো— হারিকেন নিভে গেলে, আসলে নিভে যায় আত্মার চামচিকাও? জানা যায় না আর, ঘরের কোন কোণে বসে থাকে স্মৃতি-চোর, আর কোন জানালা দিয়ে পাড়ি দেয় একরত্তি হাহাকার।

আমরা তখন গুঁড়ো করে ফেলি চাঁদের আঁচল, তাতে বুনে ফেলি নতুন এক গোধূলিঘণ্টা, যা বাজলে মানুষ নয়, বাজে পোকার পুরুষালি কান্না।

সেই কান্না শুনেই বেড়ে ওঠে মাছিরা— তারা ভিড় জমায় আমাদের চোখের পাতায়, শরীরের আবরণে আর গোপন ঈর্ষায়।

 

নাফিউল হক জন্ম ১৯ ডিসেম্বর, ধনু রাশির জাতক।

Link copied!