নতুন ডিজাইনের টাকা বাজারে ছাড়ার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের অধিকাংশ ব্যাংকের এটিএম ও সিআরএম (ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন) এখনো সেগুলো শনাক্ত করতে পারছে না। ২০২৫ সালের ১ জুন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এক হাজার, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট চালু করলেও সেগুলো এখন পর্যন্ত কোনো বুথ থেকে তোলা বা সেখানে জমা দেওয়া যাচ্ছে না। এতে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা।
নতুন নোট শনাক্তে ব্যর্থ হচ্ছে মেট্রোরেলের স্বয়ংক্রিয় টিকিট মেশিনগুলোও। নতুন টাকা ঢোকালেই সেগুলো ফেরত পাঠাচ্ছে মেশিন। ফলে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটার সময় বিড়ম্বনার মুখে পড়ছেন।
বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মেশিন সফটওয়্যার আপডেটের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কেউ কেউ পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করলেও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি কোথাও। ব্যাংকগুলো দাবি করছে, হঠাৎ নতুন ডিজাইনের নোট ছাড়ায় তারা সময়মতো প্রস্তুতি নিতে পারেননি।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং প্রধান জানান, ‘নতুন নোটের টেমপ্লেট একেবারে আলাদা হওয়ায় সফটওয়্যার আপডেট করতে সময় লাগছে। সাধারণত এমন পরিবর্তনে তিন মাস সময় লাগে, কিন্তু এবার সেই সুযোগ মেলেনি।’
অর্থনীতিবিদদের মতে, এমন বড় কারিগরি পরিবর্তনের আগে ব্যাংকগুলোর সাথে সমন্বয় না করায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে ভোক্তাদের ভোগান্তি যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যাংকগুলোরও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রায় ১,৬০০ কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে। তবে এখনো অধিকাংশ বুথ সেগুলো গ্রহণ করতে পারছে না।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহ আলম পাটোয়ারি বলেন, ‘আমাদের সফটওয়্যার আপডেট শেষ হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ১০টি বুথে নতুন টাকা শনাক্ত হচ্ছে। সফল হলে ১০-১৫ দিনের মধ্যে সব বুথে চালু হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘প্রথম দিকে কিছু অভিযোগ পেয়েছিলাম, তখনই ব্যাংকগুলোকে দ্রুত আপডেটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে বলেই মনে করি। নতুন করে অভিযোগ এলে আবার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মেশিন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের। তারা এটিএম তুলে সিআরএম বসাচ্ছে, তাই সময় লাগছে। আবার বিদেশি ভেন্ডরদের সম্পৃক্ততা থাকায় আপডেট প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।’
আপনার মতামত লিখুন :