স্পেনের মারসিয়া অঞ্চলের জুমিয়া শহরে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো মুসলিম ধর্মীয় উৎসব উদযাপন নিষিদ্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া এসব উৎসব উদযাপনে সিটি সেন্টার, জিম ও অন্যান্য জনসাধারণের সুবিধা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, স্পেনের ইতিহাসে এই প্রথমবার এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি হলো। দেশটির রক্ষণশীল পিপলস পার্টি প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে ডানপন্থী ভক্স এ বিষয়ে মৌন সম্মতি দেয়। এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করেছে বামপন্থী দলগুলো।
স্থানীয় প্রশাসন নতুন নিয়মে জানিয়েছে, ‘যেসব ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক বা সামাজিক কর্মকাণ্ড আমাদের পরিচয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত না হলে—মিউনিসিপাল স্পোর্টস ও অন্যান্য জনসাধারণের সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না।’
স্প্যানিশ ইসলামিক সংগঠনের ফেডারেশনের সভাপতি মুনির বেনজেল্লুন আন্দালুসি আজহারি এই প্রস্তাবকে ‘ইসলামবিদ্বেষী এবং বৈষম্যমূলক’বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা অন্য ধর্মকে নয়, কেবল আমাদের ধর্মকে টার্গেট করছে।’
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত স্পেনের সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর মতাদর্শ, ধর্ম ও উপাসনার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। এর প্রকাশে কোনো বিধিনিষেধ কেবল তখনই আরোপযোগ্য যখন তা আইন দ্বারা সুরক্ষিত জনশৃঙ্খলার জন্য প্রয়োজন হয়।’
উল্লেখ্য, জুমিয়া প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল, এরপর ৮ম শতকে আরবদের দখলে চলে যায়। তখন শহরটির নাম ছিল ইউমিলা এবং কয়েক শতাব্দী ধরে এটি মূলত আরব অধ্যুষিত এলাকা ছিল।
১৩শ শতকের মাঝামাঝি, ক্যাস্তিলের রাজা দশম আলফোনসোর নেতৃত্বে খ্রিস্টান বাহিনী শহরটি আক্রমণ করে। প্রথমে একটি চুক্তি হয়, যার আওতায় আলফোনসো রাজা হতে পারেন; তবে স্থানীয়দের অধিকার রক্ষা করতে হবে— এই শর্তে। কিন্তু তার মৃত্যুর পরপরই ক্যাস্তিল পুরো দখল নিয়ে আরব শাসনের অবসান ঘটায়।
আপনার মতামত লিখুন :