৫০০ দিনের অবরোধের পর সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষরত আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এল-ফাশার ও দারফুর অঞ্চলের বিস্তৃত এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। শহরের পতন সুদানের সংঘাতকে নতুনভাবে উস্কে দিচ্ছে এবং দুই দশক আগের দারফুরে ঘটে যাওয়া গণহত্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সময় প্রায় ২ লাখ বেসামরিক লোক এল-ফাশারে আটকা পড়েছিল।
মানবাধিকার সংস্থা বলছে, সেখানে পরিকল্পিত হত্যা চালানো হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে মুহাম্মদ খামিস দুদা, জমজম বাস্তুচ্যুত শিবিরের মুখপাত্র। তিনি কয়েক মাস ধরে অবরোধের সময় শহরের ভয়েস বার্তা রেকর্ড করতেন। এপ্রিলে শিবিরে আরএসএফের হামলায় শত শত মানুষ নিহত হলেও তিনি সহযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য চলে যাননি। মৃত্যুর আগে তিনি এনপিআরকে বলেছিলেন, ‘এল-ফাশারের পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত ভয়াবহ।’
আরএসএফ এবং তার সহযোগী আরব মিলিশিয়ারা, কুখ্যাত জানজাউইদের বংশোদ্ভূত, এখন সমগ্র দারফুর নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অঞ্চলের মানুষ বহু দশক ধরে জাতিগত সহিংসতার শিকার। অনলাইনে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, আরএসএফের যোদ্ধারা বেসামরিক মানুষ ও হাসপাতালের রোগীদের হত্যা করছে।
সুদানী বিশ্লেষক খোলুদ খায়ের বলেন, ‘এটি শুধু গৃহযুদ্ধ নয়, বরং গণহত্যার ধারাবাহিকতা।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণাগারের স্যাটেলাইট চিত্রে এল-ফাশারে গণকবর ও ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন স্পষ্ট। ল্যাব পরিচালক নাথানিয়েল রেমন্ড বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন মহাকাশ থেকে ধ্বংসযজ্ঞ দেখছি। কেউ বলতে পারবে না, তারা জানত না।’
দুই বছরের সংঘাত জুড়ে আরএসএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থিত, যদিও দেশটি জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সুদানী-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মী এমি মাহমুদ বলেন, ‘এটি আমাদের স্রেব্রেনিকা মুহূর্ত। এল-ফাশার ধ্বংস পৃথিবীর নজরে এসেছে, কিন্তু কেউ হস্তক্ষেপ না করলে বাঁচানোর জন্য কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।’
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, এল-ফাশারের পতনের পর ২৬ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে নিকটবর্তী তাওইলা গ্রামে, যেখানে শিশু, অপুষ্টিতে ভোগা মানুষ ও বৃদ্ধরা সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছে, কিন্তু সাহায্য কর্মীরা ‘অসাধারণ বিপদের’ মুখোমুখি। এল-ফাশারের হাসপাতালগুলোতে ৪৬০ জনেরও বেশি প্রসূতি ও তাদের সহযোগী নিহত হয়েছে, বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তারা মনে করিয়েছে, রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এল-ফাশারের নিয়ন্ত্রণ আরএসএফকে সুদানের এক-তৃতীয়াংশের উপর আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ দিচ্ছে, যা দেশের বিভাজন আরও গভীর করবে।
প্রাক্তন বিশেষ দূত ক্যামেরন হাডসন বলেন, ‘এল-ফাশার অধিকার করলে তারা আলোচনার টেবিলে আরও শক্ত অবস্থান পাবে।’

 
                             সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251030020737.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন