সামরিক সক্ষমতার প্রদর্শন হিসেবে উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি সমুদ্র থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য নতুন ধরনের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের ঠিক আগে এই উৎক্ষেপণ দেশটির সামরিক অবস্থানকে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এক প্রতিবেদনে জানায়, গত মঙ্গলবার উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দুই ঘণ্টারও বেশি সময় উড়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় জলসীমায় নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। এই অস্ত্রগুলো পারমাণবিক-সজ্জিত সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের পরিধি আরও সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, তাদের সেনাবাহিনী উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি আগেই শনাক্ত করেছিল। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উত্তর কোরিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়।
জেসিএস আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে এই অস্ত্রের বিশ্লেষণ করছে এবং উত্তর কোরিয়ার যেকোনো উস্কানির বিরুদ্ধে ‘কার্যকর প্রতিক্রিয়া’ দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
এই উৎক্ষেপণটি এমন সময়ে ঘটল, যখন ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং–এর মধ্যে গিয়ংজু শহরে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ বৈঠকের মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি।
উল্লেখযোগ্যভাবে, দক্ষিণ কোরিয়া এ বছর এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (APEC) সম্মেলনের আয়োজক দেশ।
এদিকে জাপান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ান–এ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে তুচ্ছ করে বলেন, ‘আমরা তো কয়েক দশক ধরেই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে, তাই না?’
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন–এর প্রসঙ্গে ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি এখনো কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিন দফা বৈঠকের পর নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে তাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের একে অপরের সম্পর্কে সত্যিই ভালো ধারণা ছিল।’
কেসিএনএ জানিয়েছে, পরীক্ষাগুলোতে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা পাক জং চোন, যিনি নতুন তৈরি যুদ্ধজাহাজ চো হিওন ও কাং কন–এর নাবিকদের প্রশিক্ষণও তদারকি করেন। কিম জং উন এই দুটি জাহাজকে দেশের নৌবাহিনী শক্তিশালী করার গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া একটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা দেয়, যেখানে নতুন এক হাইপারসনিক সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকার দাবি করা হয়। এটি দেশের পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন