ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

রেমিট্যান্স আহরণে ইতিহাস

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
মার্কিন ডলার। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড গড়েছে দেশটি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এখনও দু’দিন বাকি থাকতেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩ হাজার ৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)।

শনিবার (২৯ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এতদিন পর্যন্ত এক বছরে দেশের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ছিল। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে ৩০ বিলিয়নের মাইলফলক স্পর্শ করল বাংলাদেশ।

চলতি জুন মাসের প্রথম ২৮ দিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৫৪ কোটি ডলার (প্রায় ৩১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা)। অর্থবছরের শেষ দু’দিনে যদি এই গতি অব্যাহত থাকে, তাহলে জুন মাস শেষে রেমিট্যান্স ২৭০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হুন্ডি প্রতিরোধ, প্রণোদনা বাড়ানো, ব্যাংকিং চ্যানেলের উন্নয়ন ও দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি উদ্যোগ ও আর্থিক খাতের আধুনিকায়ন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে মূল ভূমিকা রেখেছে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুন মাসে (২৮ দিন পর্যন্ত) ৩ হাজার ৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (২০২৩-২৪) দেশে এসেছিল ২ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে এবার ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বৈদেশিক মুদ্রার চাপ মোকাবেলায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বড় শক্তি হিসেবে কাজ করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে টানা ৮ মাস ধরে দুই বিলিয়নের বেশি এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।