বিশ্ববাজারে চালের দাম কমতির দিকে থাকলেও দেশের বাজারে উল্টো চিত্র, চালের দাম বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানিয়েছে, জুন মাসে বিশ্ববাজারে চালের চাহিদা কমায় দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। তবে বাংলাদেশে একই সময়ে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৮২ থেকে ৮৫ টাকায় এবং মোটা চাল ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ চালের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছে বিক্রেতারাই।
ব্যবসায়ী রাকিব জানান, ‘ঈদের পর হঠাৎ করেই দাম বেড়েছে, অথচ সরবরাহ স্বাভাবিক।’
ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘পণ্য বাজার এখনো গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলালেও বাজার সিন্ডিকেট বদলায়নি।’
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ী, মিল মালিক ও করপোরেট হাউজগুলোর অসাধু কারসাজির কারণেই বাজার অস্থিতিশীল। সরকারি তদারকি বাড়ালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং মজুতদারি কমবে।’
বিশ্ববাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কমেছে ভুট্টা, জোয়ার ও বার্লির দাম। চিনির উৎপাদন বাড়ায় জুনেও কমেছে এর দাম ৫.২ শতাংশ। এটি ২০২১ সালের এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। তবে অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে, বিশেষ করে মাখনের দাম বেড়েছে ২.৮ শতাংশ এবং পনিরের দামও বাড়ছে টানা তিন মাস ধরে।
এদিকে ভোজ্যতেলের বাজারেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সূর্যমুখী বাদে অন্যান্য তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। পাম তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ।