দেশের অন্যতম অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ হঠাৎ করে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, এর ব্যবস্থাপনা অংশীদার ও সিইও সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েম ২ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অফিস ও ওয়েবসাইট।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০১৭ সাল থেকে ওটিএ (অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি) হিসেবে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। অতিরিক্ত ছাড় দিয়ে বাজারে জায়গা করে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় তারা জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। প্রতিটি টিকিটে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দিয়ে বড় অঙ্কের বিক্রয় করত প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র জানায়, ফ্লাইট এক্সপার্টের ওটিএ ব্যাংক গ্যারান্টির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া তারা বিভিন্ন বড় এজেন্সি থেকে টিকিট কিনে পুনরায় বিক্রি করত, যার আর্থিক পরিমাণ এখনও নিশ্চিত নয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ আগস্ট বিকেলে আটাবের (এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ) প্রধান কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ফ্লাইট এক্সপার্টের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত ছাড়াও তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
আটাব আরও জানিয়েছে, যাত্রী হয়রানি ও এজেন্টদের আর্থিক ক্ষতি কমাতে ফ্লাইট এক্সপার্ট ইস্যুকৃত টিকিটগুলোর রিফান্ড সাময়িক স্থগিত রাখতে মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এছাড়া, ব্যাংকগুলো যাতে কার্ডের মাধ্যমে অতিরিক্ত ছাড় দিয়ে টিকিট বিক্রয়ের অসুস্থ প্রতিযোগিতা না করে, সে বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগেও ‘হালট্রিপ’, ‘২৪টিকেট ডটকম’ এবং ‘লেটস ফ্লাই’-এর মতো ওটিএ প্রতিষ্ঠানগুলো একই কায়দায় প্রতারণা করে বাজার থেকে উধাও হয়েছে। অতিরিক্ত কমিশনের লোভ দেখিয়ে গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা ওটিএ প্ল্যাটফর্মে বাড়ছে।
আটাব জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলনও করেছিল সংগঠনটি।
এমতাবস্থায়, পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্প রক্ষায় প্রতারক ওটিএগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং দ্রুত গাইডলাইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে আটাব।