জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচনি প্রতীক ‘শাপলা’ পেতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইসির সাম্প্রতিক প্রকাশিত গেজেটে ‘শাপলা’ প্রতীক না থাকলেও দলটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেবে ইসি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ইসিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল নির্বাচন কমিশনকে তাদের অনাপত্তির কথা জানিয়েছে।
বিএনপির এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া হলে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই।
ইসির কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পর এনসিপি আনুষ্ঠানিকভাবে শাপলা প্রতীক বরাদ্দের জন্য আবারও আবেদন করেছে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, অন্য কোনো প্রতীকে তারা রাজি নয়।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, শাপলা প্রতীক নিয়ে ইসির সঙ্গে তাদের আলোচনা অনেক পুরোনো ও ধারাবাহিক। এই প্রতীক শুধু একটি চিহ্ন নয়, বরং দলের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক। জনগণের সঙ্গে সম্পর্কেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তিনি অভিযোগ করেন, ইসির প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকা একটি বড় সীমাবদ্ধতা।
এদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না গত ৩ অক্টোবর জানান, এনসিপি শাপলা প্রতীক দাবি করার পর দলটির কয়েকজন নেতা তার সঙ্গে দেখা করে সমর্থন চেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনে এনসিপির ভূমিকার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—ইসি তাদের শাপলা প্রতীক দিলে তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন না। উল্লেখ্য, নাগরিক ঐক্যের বর্তমান প্রতীক হলো ‘কেতলি’। তবে নিবন্ধনের সময় তারাও শাপলা প্রতীক চেয়েছিল, যদিও ইসি তা দেয়নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন ২৫ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নাগরিক ঐক্যও একসময় শাপলা প্রতীক দাবি করেছিল, কিন্তু তাদেরও দেওয়া হয়নি। ৩০ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধন দেয় ইসি। এরপর থেকেই এনসিপি নিয়মিতভাবে শাপলা প্রতীকের দাবি জানিয়ে আসছে।
তবে ২ অক্টোবর ইসি যে ১১৫টি প্রতীকের গেজেট প্রকাশ করে, তাতে শাপলা প্রতীক ছিল না। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক স্থগিত থাকায় জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক পুনর্বহাল করা হয়। ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, শাপলা প্রতীক তালিকায় না থাকায় তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি। দলটিকে বিকল্প প্রতীকের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে।
ইসি জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নীতিগতভাবে পর্যালোচনা করতে পারে, তবে সিদ্ধান্তের জন্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সমন্বয় জরুরি। বিধিমালা সংশোধনের পর শাপলা প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলে এনসিপিকে তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব।