বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের একটি বক্তব্য বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আয়োজিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা (স্টাডি পিরিয়ড) অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনি কাঠামোর আলোকে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে মূলত ‘In Aid to Civil Power’ বা বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধি (CrPC) ১২৭-১৩২ ধারা নিয়ে আলোচনা হয়।
বক্তব্যে সেনাপ্রধান CrPC ১৩২ ধারা অনুযায়ী দায়মুক্তির আইনি দিক এবং এর সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি International Crimes (Tribunals) Act, 1973 (সংশোধিত ২০২৪) আইনের সঙ্গে এই দায়মুক্তির সাংঘর্ষিক দিক নিয়েও আলোকপাত করেন। তবে তিনি কোনো পর্যায়েই গুম, হত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করেননি।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি চিহ্নিত কুচক্রী মহল- বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তি- উক্ত বক্তব্যকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাচ্ছে।
সেনাবাহিনী জানায়, অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল আইনগত, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দিয়ে মাঠপর্যায়ে কর্মরত সেনা সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে দায়িত্ব পালনে তাদের সক্ষম করে তোলা। প্রয়োজনে সেনাসদস্যদের আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
বিবৃতির শেষ অংশে সেনাবাহিনী স্পষ্ট করে জানায়, তারা সর্বদা সংবিধান, দেশের প্রচলিত আইন এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন অপপ্রচারের বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
