দীর্ঘ ১৭ বছর নির্যাতিত হয়ে দেশের বাইরে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই সময়ে হারিয়েছেন ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে। সুস্থ মাকে কারাবন্দী রেখে করা হয়েছে অসুস্থ। পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত ঘরবাড়ি সবকিছুই হারিয়েছেন। গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে পারেননি দীর্ঘ ২০ বছর।
অবশেষে কোনো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে লন্ডন থেকে তার দেশে ফেরা, আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ, দলের অবস্থান, জুলাই অভ্যুত্থান প্রসঙ্গ, দলের প্রার্থীদের নমিনেশন, আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া, জামায়াত ইসলামী প্রসঙ্গ, ডাকসু নির্বাচন, নির্বাচনী সরকার নিয়ে সরকার গঠন, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফেরা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে সাক্ষাৎকারটির প্রথম পর্ব বিবিসি বাংলার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়েছে। রূপালী বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য তারেক রহমানের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা গুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
১. আমি দ্রুতই দেশে ফিরছি।
২. জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড আমি নই, দেশের জনগণ।
৩. ৬৩ জন শিশু জুলাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে, দুই হাজারের মতো মানুষ শহীদ হয়েছে, এই আন্দোলনে জিতেছে গণতন্ত্রকামী মানুষ।
৪. নির্বাচন যত দ্রুত হবে তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা আসবে।
৫. জামায়াতের জোটবদ্ধ নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত নই, প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে।
৬. বিগত সময় আমাদের সাথে ৬৪টি রাজনৈতিক দল একসাথে কাজ করেছে, আন্দোলন করেছে, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করব।
৭. আগামী নির্বাচনে যারা স্থানীয় সমস্যার সম্পর্কে অবহিত, মানুষের সাথে সম্পৃক্ত তারাই নমিনেশন পাবে।
৮. আমি (তারেক রহমান) আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
৯. প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, দল সিদ্ধান্ত নেবে।
১০. দেশের আপোষহীন নেত্রী সুস্থ অবস্থায় কারাগারে যান, বের হন অসুস্থ হয়ে, খালেদা জিয়ার সুস্থতার ওপর তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নির্ভর করছে।
১১. আমাকে যেভাবে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে আমি সেগুলো এখনো অনুভব করি।
১২. মিডিয়ায় মিথ্যা অপপ্রচারের শিকার হয়েছি।
১৩. রাজনীতি পরিবারকরণ আর হবে না, সমর্থনের মধ্যেই হবে।
১৪. প্রার্থী নির্বাচনে মানুষের চাওয়া থাকবে, গ্রহণযোগ্যতাটাকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া।
১৫. আগামীতে দুর্নীতি হবে না, বিশ্বে সম্মানের সাথে পরিচয় চেষ্টা থাকবে।
১৬. সাত হাজার নেতাকর্মীর মধ্যে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি।
১৭. আমাদের নেতাকর্মীদের যাদের বৈধ সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলো আওয়ামী লীগের লোকদের কাছ থেকে উদ্ধারের ঘটনাকেও দখলের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
১৮. ডাকসু নির্বাচন গণতান্ত্রিক যাত্রার শুভ সূচনা, যারা জয়ী তাদের শুভেচ্ছা জানাই।
১৯. ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব পড়ার কোনো কারণ দেখি না।
২০. ‘৭১ সালে জামায়াতের ভূমিকার জবাব জামায়াতই দেবে, আমরা নই।
২১. আমি ১৭ বছর বিদেশে আছি, ওয়ান-ইলেভেনে আমি যখন নির্যাতিত হয়ে এসেছি তখন আমি আমার ভাইকে রেখে এসেছিলাম, সুস্থ মাকে রেখে এসেছিলাম, একটি ঘর রেখে এসেছিলাম। এখন আমার ভাই নেই, সুস্থ মা নেই, ঘর নেই, যেখানে আমার ভাইয়ের সন্তানরা জন্মগ্রহণ করেছেন।
২২. প্রতিশোধের কোনো বিষয় নয়, স্বৈরশাসকের সময় নির্যাতিত সকল ঘটনার বিচার হতে হবে, অন্যায় হলে বিচার হতে হয়।
২৩. দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত আদালত নেবে, তাদের বিচার হতে হবে।