ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ দেশব্যাপী সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে জনস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৩ জুলাই ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চিঠির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের সব হাসপাতাল, মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ, বিশেষায়িত হাসপাতাল, নার্সিং কলেজসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
এ নির্দেশনার মাধ্যমে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, সেবাপ্রদানকারী এবং রোগী ও দর্শনার্থীদের জন্য শতভাগ ধূমপান ও তামাকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) প্রোগ্রামের লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন সম্প্রতি এই নির্দেশনা জারি করেছেন।
সভাপতি অধ্যাপক রিজভী বলেন, ‘হাসপাতাল হলো রোগ নিরাময়ের স্থান। এখানে ধূমপান বা তামাকের উপস্থিতি রোগী ও এটেন্ডিদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পরোক্ষ ধূমপান হৃদরোগ, ক্যানসার ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো শতভাগ ধূমপান ও তামাকমুক্ত হবে।’
শতভাগ তামাকমুক্ত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের প্রবেশপথ ও অভ্যন্তরে দৃশ্যমান স্থানে ধূমপান ও তামাকমুক্ত সাইনেজ স্থাপন, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান না রাখা, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বন্ধ করা এবং তামাকসেবী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও রোগীকে পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO-SEARO, ২০১৮) অনুসারে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত কারণে মারা যান, যার মধ্যে ২১% মৃত্যুই পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ঘটে। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (GATS, ২০১৭) অনুযায়ী, দেশের ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সি জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩% মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রে ৪২.৭%, হসপিটালিটি সেক্টরে ৪৯.৭%, যানবাহনে ৪৪% এবং স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রেও ১২.৭% মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন আশা করছে, দ্রুত এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো শতভাগ তামাকমুক্ত পরিবেশে রূপান্তরিত হবে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন