দীর্ঘ সময় পর রাজধানীর কাঁচাবাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে শাক-সবজির দাম। ফলে, স্বস্তি ফিরছে ভোক্তাদের মাঝে। তবে চাল ও তেলের বাজারের অস্থিরতায় সেই স্বস্তি যেন গায়ে লাগছে না ভোক্তাদের। পাশাপাশি বাজারে এখনো চড়া ডিম ও মাছের দামও।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) নবাবগঞ্জ, শান্তিনগর, নিউমার্কেটসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ অনেক বেড়েছে। ফলে, এখন দাম কমতে শুরু করেছে।
রাজধানীর নবাবগঞ্জ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আব্দুল হালিম মিয়া জানান, সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার ফলে সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে শাক সবজির দাম। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম আরও কমে আসবে।
মানভেদে বাজারে প্রতি কেজি আলু ৬৫-৭৫ টাকা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেড়শ ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, মুলা ২৫-৩০ টাকা, লতি ৭০ টাকা, কহি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা ও পটোল ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, গাজর ৬০-৭০ টাকা, ক্ষিরাই ৫০ টাকা, টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
পেঁয়াজের কালি ৫০ টাকা, নতুন আলু ৮০ টাকা । প্রতি পিস ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।
দাম কমেছে কাঁচা মরিচের। খুচরা পর্যায়ে এটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০-৯০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৫০-৬০ টাকায়। এছাড়া, বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০-১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০-১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
শিমুল হাসান (ক্রেতা) জানান, সবজির দাম কমতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। শাক-সবজির দাম কমছে । তবে শীতকাল অনুযায়ী এখনও দাম অনেক বেশি।
নজরুল হামিদ (ক্রেতা) জানান, বাজার শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। তবে আরো দাম কম ছিল বিগত শীতের সময়গুলোতে। আরও কমা উচিত দাম। না হলে বাজারে পুরোপুরি স্বস্তি আসবে না।
এদিকে, তেল-চালের বাজারে রয়েছে অস্বস্তি। শাক-সবজির দাম কমলেও চড়া চাল ও তেলের বাজার। বাজারে প্রতিকেজি ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতারা জানান, মিলার ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার।
তারা বলেন, মিনিকেট চাল কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৭২-৭৫ টাকায়। আর নতুন আটাইশ ৫৫-৫৭ টাকা, পুরাতন আটাইশ ৬০-৬২ টাকা ও নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কমেনি তেলের বাজারের অস্থিরতা। সরকার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৫৭ নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকার ওপরে।
বিক্রেতারা দাবি করছেন, দাম নির্ধারণের পর বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা তেল।
ক্রেতাদের বলছেন, বাজারে এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না কোনো তেলই। দাম বাড়ানোর পরেও বাজারে পর্যাপ্ত তেল মিলছে না। যাও পাওয়া যাচ্ছে, সেটির জন্যও গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। দাম নির্ধারণের পর বাজারে মনিটরিং না থাকায় ফের সিন্ডিকেট করছে ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতাদের দাবি, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ে রাখতে হবে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে বলে, অভিযোগ তাদের।
আপনার মতামত লিখুন :