জাবি: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে। মাসব্যাপী চলা এই আন্দোলনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকেই মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এমতাবস্থায় সশরীরে ক্লাস শুরু নিয়ে ভিন্নমত সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে রুপালী বাংলাদেশ। ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ``আমরা সারাদেশ ব্যাপী চলা আন্দোলনের পক্ষে লড়েছি। আমাদের অনেক বন্ধু বান্ধব আক্রান্ত হয়েছে। সবাই আতঙ্কে ছিলো। আমাদের শিক্ষকদের উচিত ছিলো আমাদের আগে মানসিক সাপোর্ট দেয়া তারপর ক্লাস শুরু করা। আমার চাওয়া থাকবে যেন শিক্ষকরা সেটি করেন।``
বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত জানান, ``আমাদের ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছি। শিক্ষকরা আমাদের দাবিগুলো মেনে নিবেন তারপর আমরা ক্লাসে ফিরবো। পাশাপাশি মানসিকভাবে ভেঙে পড়া শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করে তাদেরকে মোটিভেট করতে হবে।``
এছাড়াও দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, ``আমাদের বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক সরকার দলীয় থাকায় তাঁরা আমাদের আন্দোলনে আমাদের উপর নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন এবং কয়েকজনকে হুমকিও দেন যেন আন্দোলনে যোগদান না করে। আমরা তাঁদের পদত্যাগ দাবি করছি। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের যেন কোনোভাবে হয়রানি করা না হয় এবং তাদের পাশে থেকে তাদের যেন সাপোর্ট করা হয় এটাই আমাদের চাওয়া। ``
আইন বিভাগের ৪র্থ বিভাগের শিক্ষার্থী নিলয় ভুঁইয়া জানান, বহু শিক্ষার্থীর প্রাণের বিনিময়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন শেষ হওয়ার পর শিক্ষকদের কাছ থেকে আমাদের আশা ছিল উনারা যেন শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ থেকে উৎরানোর জন্য সাপোর্ট করেন,পাশাপাশি বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। যাতে তারা তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে আবার আগের মতো অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু তার কিছুই আমরা বর্তমানে লক্ষ্য করছিনা। উপরন্তু প্রায় ডিপার্টমেন্টে ক্লাস শুরু হয়ে গেছে যেন বিগত সময়ে কোন কিছুই হয়নি। আমরা নতুন বাংলাদেশে শিক্ষকদের কাছ থেকে আমাদের জন্য সর্বোচ্চ সাপোর্ট আশা করি।
পরিবেশ বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজিবুল ইসলাম রানা বলেন, অনেকগুলো শিক্ষার্থীর জীবনের বিনিময়ের আজ আমরা একটা শোষণমুক্ত সমাজ পেয়েছি। অনেক আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি। এই মুহূর্তে ক্লাসে ফিরেই আমাদের মনে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর দেশ গড়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষায় ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে। ক্লাসরুমের সংকট ও সেশনজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বিভাগের শিক্ষকদের।
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চলাকালীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৭ জুলাই হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে। ১১ আগস্ট থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়। - রিপন বারী
আপনার মতামত লিখুন :