সারা দেশে ইসকন (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, হত্যা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে তারা সংগঠনটি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘ইসকন তুই জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী’, ‘একটা একটা ইসকন ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই’, ‘ইসকন আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার’—এমন নানা স্লোগান দেন।
তারা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসকন কর্মীরা ধর্মীয় উসকানি, সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত। এ ধরনের কার্যকলাপের দ্রুত তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি জানান তারা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দেশে কোনো উগ্রবাদী সংগঠনের ঠাঁই হতে পারে না, ধর্মের নামে বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না।’
মাহতাপ ইসলাম নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, জঙ্গিবাদবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় খতিব মহিবুল্লাহকে পঞ্চগড়ে ইসকন সদস্যরা অপহরণ করে নির্যাতন চালিয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারের ছত্রছায়ায় ভারতীয় প্রভাবের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিচালনার যে অপচেষ্টা চলছে, আমরা আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছি ভারতের কোনো প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বাংলাদেশ চলবে না।
তার ভাষ্য, ভারত এখনো ইসকনকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলী হত্যাসহ একাধিক ঘটনায় ইসকন সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই স্বৈরাচারকে যেমন বিদায় দিয়েছি, ইসকনকেও এই দেশ থেকে বিদায় জানাব।
আরেক শিক্ষার্থী সাদমান আব্দুল বলেন, ‘ইসকন শুরু থেকেই একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে কাজ করছে। তারা ভারতীয় প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গাজীপুরে ১৩ বছরের এক মেয়েকে ধর্ষণ এবং খতিব অপহরণের ঘটনাসহ নানা অপরাধে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে রক্ত দিয়েছি। সেই রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে কোনো জঙ্গিবাদী বা ইসলামবিরোধী সংগঠন তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অতি দ্রুত ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’