শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম

বৃষ্টিস্নাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বৃষ্টি প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের অপর নাম । বৃষ্টিতে ভিজতে কার না ভালো লাগে। আর সেই বৃষ্টি যদি হয় ক্যাম্পাসে, তাহলে ত কথাই নেই। ব্যস্ত ক্যাম্পাসে হঠাৎ বৃষ্টি যেন এনে দেয় এক গভীর নীরবতা। ক্যাম্পাসের বৃষ্টি যেন স্নিগ্ধ অনুভূতির অপর নাম।ক্যাম্পাসের পিচঢালা রাস্তায় বৃষ্টির ফোটাগুলো যেন বষার্র উপস্থিতি জানান দেয়। বৃষ্টির পরশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পায়, ফিরে পায় নিজের সজীব অস্তিত্ব।

সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে দেশব্যাপী নেমেছে বৃষ্টির ধারা। গত সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড গরম পড়তে শুরু করে। দেশের অন্তত ২০টি জেলায় বয়ে যায় তাপপ্রবাহ যা বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যশোর ও খুলনা অঞ্চলে অবস্থানের পর থেকেই উক্ত অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। যার প্রভাবে বৃষ্টি নেমেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও।

১৭৫ একরের সবুজের মহাসমারোহে ঘেরা অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বৃষ্টিতে এক মোহনীয় রূপ ধারণ করে। যার প্রেমে পড়ে যায় পথচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরাও। ক্যাম্পাসের ডায়না চত্বর, বটতলা, পাই চত্বর, টিএসসিসি, প্যারাডাইস রোড সহ সমগ্র ক্যাম্পাসে যেন এক সজীবতা ফিরে আসে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করা, একটি মাত্র ছাতার নিচে দুই তিনজনের হেটে যাওয়া কিংবা প্রেমিক যুগলের বৃষ্টি বিলাশ - সবমিলিয়ে ক্যাম্পাস জুড়ে রোমাঞ্চকর এক অনুভূতি।

ঝড়বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ না থাকলেও হলের বেশ কয়জন শিক্ষার্থীকে দেখা যায় রুমে বসে অনলাইনে ক্লাস করতে। আবার কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়ামোড়ে চায়ের টঙে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে। রাত থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে যেয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে মোবাইল চার্জ দিতে। আবার একদল শিক্ষার্থীকে দেখা যায় ঝুমঝুম বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল মাঠে ফুটবল খেলতে। তবে ক্যাম্পাসে চলমান এতকিছুর মধ্যেও অসংখ্য শিক্ষার্থীকে পাওয়া যায় রুমে শুয়ে আরামের ঘুম ঘুমাতে। তাদের কাছে বৃষ্টির দিনের ঘুমটাই যেন সবকিছু।

ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখা যায় বেশ কিছু চিত্রের। বঙ্গবন্ধু হলের পুকুরে পাওয়া যায় একদল শিক্ষার্থীকে সাঁতার কাটতে। জিগ্যেস করলে বলেন, ছোটবেলায় বাড়ির পাশের পুকুরে লাফালাফি করতাম। এবারের বর্ষায় পুকুরে বেশ পানি হয়েছে। তাই ছোটবেলার মতো সাঁতার কাটার লোভ সামলাতে পারলাম না। পশ্চিম পাড়ার রাস্তায় চোখে পড়ে একই ছাতার নিচে থাকা প্রেমিক যুগলের। ক্যাম্পাসের অন্যান্য জায়গা থেকে পশ্চিম পাড়ার রাস্তায় তাদের সংখ্যাটা যেন একটু বেশি ই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিস, চিকিৎসাকেন্দ্র, মফিজ লেক এবং প্রতিটি রাস্তার দুপাশে থাকা ফুল ও পাতাবাহার গাছের পাতা গুলো বৃষ্টিতে ধুয়ে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

শিক্ষার্থী জাহিদ বলেন, কৈশোরে বৃষ্টিতে ভেজার কথা খুব মনে পড়ে। কবে বৃষ্টি হবে, আকাশ পানে চেয়ে দিন গুনতাম শুধু  বৃষ্টিতে ভেজার জন্য। মায়ের বকুনি, বিজলি চমকানির ভয়, কিছুই ফেরাতে পারেনি বৃষ্টিতে ভেজা থেকে। তবে ক্যাম্পাসে এসে আর সেভাবে বৃষ্টিবিলাস করা হয়না। ক্লাস-পরীক্ষার চাপে অনেকটা যান্ত্রিক জীবন কাটাই। তাই বৃষ্টির দিন পেলে খুবই ভালো লাগে। অনেকদিন পর বৃষ্টিতে ভেজা, কাকভেজা হয়ে ক্যাম্পাসের সমগ্র এলাকা ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

শিক্ষার্থী ফারজানা বলেন, কর্মব্যস্ত ক্যাম্পাসের ক্লাস, পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল, অ্যাসাইমেন্ট, প্রেজেন্টেশনের মতো ধরাবাধা একাডেমিক কাজ থেকে হাফ ছেড়ে বাচঁতে শিক্ষার্থীরা বোধ হয় একটু বৃষ্টির দিনের অপেক্ষায় থাকে। আমাদের ক্যাম্পাসে গাছপালা পরিমাণ বেশ ভালো। হল থেকে বেরিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরতে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে খুবই ভালো লাগে। বৃষ্টির মধ্যে টঙের চা পানের অনুভূতিটাও অসাধারণ। বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাস নিজে যেমন সজীব হয়েছে, তেমনি আমার মনকেও সজিব এবং প্রাণবন্ত করেছে।

নুরে আলম বলেন, ক্যাম্পাসে আসার পর বৃষ্টি কেন্দ্রীক সময় গুলো খুব মিস করছিলাম। গতকাল রাত থেকেই যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন আমার ভেতরে একটা আনন্দের অনুভূতি কাজ করে। রাতেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে আজকের দিন টা যেকোন ভাবেই হোক উপভোগ করবো। সকালে বৃষ্টি শুরুর পর হলের সবাই ফুটবল খেলতে নেমে যাই। ক্যাম্পাসে এসে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলতে পারার আনন্দটা শৈশবের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমার কাছে এটা কিঞ্চিত সৌভাগ্যেরও। এরপরে খিচুড়ি-মাংশ রান্না করে সবাই একসাথে খাওয়াদাওয়া করবো। এরচেয়ে সুন্দর ব্যাপার আর কি হতে পারে!!

আরবি/জেডআর

Link copied!