ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর ভিপি (সহসভাপতি) পদপ্রার্থী সাদিক কায়েম অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে তাদের পরিণতি শেখ হাসিনার থেকেও খারাপ হবে।’
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাদিক কায়েম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইউল্যাব কেন্দ্রে আড়াই ঘণ্টা পোলিং এজেন্ট ও অবজার্ভারদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া একুশে হল ও টিএসসি কেন্দ্রে ভোট সংশ্লিষ্ট কিছু কারচুপির খবরও তিনি পেয়েছেন। তিনি দাবি করেন, যারা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ বা বানচালের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা উচিত।’
সাদিক কায়েম ডাকসুতে সুষ্ঠু নির্বাচনকে শহীদদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে সকল পক্ষের দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যাকে নির্বাচিত করবেন তার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করা হবে। এ ছাড়া ভোটের সময় ওঠা অভিযোগগুলো সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। নিজের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত ওই কেন্দ্রে অভিযোগ জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন এবং একই সময়ে অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন।
একই সংবাদ সম্মেলনে জোটের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) ফরহাদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে; এখানে জাতীয় রাজনৈতিক দল নিয়ে মহড়া লজ্জাজনক। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট দলের লোকজন নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করছে। তবে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর বিরুদ্ধে তোলা যেকোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি নেওয়া হবে।
ফরহাদ শিক্ষকদের প্রতি ছাত্রদলের আচরণেরও প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের বাইরে এলইডি স্ক্রিন থাকা সত্ত্বেও এবং ভেতরে নির্দিষ্ট দলের পোলিং এজেন্ট থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের প্রার্থীরা জোর করে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে, যা শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে হবে এবং তাদের আবেগ বোঝার মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা করা উচিত।
এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে সাদিক কায়েম বিভিন্ন কেন্দ্রে যেসব অনিয়ম হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
তিনি জানান, পোলিং এজেন্টদের প্রবেশে বাধা, ভোট সংশ্লিষ্ট কারচুপি এবং কেন্দ্রের বাইরে কেন্দ্রীয় এলইডি স্ক্রিনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা সবই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নষ্ট করার লক্ষ্যেই করা হয়েছে। তিনি সব পক্ষকে সতর্ক করে বলেন, শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ এবং সজাগ রয়েছে; তাই কোনো পক্ষ যদি নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তার ফল ভোগ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতারা সবসময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রধান্য দিচ্ছেন এবং নির্বাচনে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকার কথা জানান। শিক্ষার্থীদের সাথে মিলেমিশে কাজ করার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফলকে গ্রহণযোগ্য ও সম্মানজনক করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তারা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন