রায়হানা পারভীন রাসুর বাড়ি ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলে। অথচ, ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগরের একটি স্কুলে। অর্থাৎ, দেশের একপ্রান্তে বাড়ি ও অন্যপ্রান্তে স্কুল। তবুও শতশত কিলোমিটার দূরের নাসিরনগরে গিয়ে ধরমন্ডল উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন তিনি।
জানতে চাইলে রায়হানা পারভীন রাসু রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘সুপারিশের ফল পেয়ে একটি বিপদেই পড়েছি। যোগদান করবো কি করবো না, এই নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। বাবা-মাও চান না এতো দূরে যাই। কিন্তু নানা সংশয় কাটিয়ে দূরের প্রতিষ্ঠানেই যোগদান করেছি বদলির সুযোগ আছে বলে।’
শুধু রায়হানা পারভীনই নন, তার মতো অনেকেই পড়েছেন এমন বিড়ম্বনায়। তবে তাদের সবার বদলির সুযোগ থাকার কারণে সুপারিশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানেই যোগদান করেছেন। কিন্তু এখন তাদের একটাই সংশয়, কত দ্রুত বদলির সুযোগ পাবেন।
সম্প্রতি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে ৪১ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
এনটিআরসিএ সূত্র বলছে, যোগদান করা সব শিক্ষকই বদলির সুযোগ পাবেন। আর এই বদলির কার্যক্রম শুরু হবে নিয়োগপত্র হাতে পেলেই।
তবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, এখনও অনেক নতুন শিক্ষক নিয়োগপত্র হাতে পাননি। বদলির জন্য তাদের প্রথমত নিয়োগপত্র হাতে পেতে হবে।
এনটিআরসিএ বলছে, প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশপত্রে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া, যোগদানপত্র গ্রহণ এবং এমপিওভুক্ত কার্যক্রম শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি ও পরবর্তী নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারির কার্যক্রম এই ষষ্ঠ নিয়োগে সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ সম্পন্নের ওপর নির্ভরশীল। তাই সুপারিশপ্রাপ্তদের যোগদান কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।
এনটিআরসিএ আরও জানায়, যোগদানের দুই বছর পর বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন নতুন শিক্ষক। নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ন্যূনতম দুই বছর চাকরি করার পরেই পরবর্তী বদলির জন্য যোগ্য হবেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, সারা বছর বদলি না হলেও একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। শিক্ষক আবেদন করার জন্য সর্বোচ্চ তিনটি পছন্দের প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করতে পারবেন। এনটিআরসিএ ষষ্ঠ নিয়োগে সুপারিশপ্রাপ্তদের ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিয়োগপত্র দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যথারীতি যোগদান করা শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলা হয়েছে। বুধবার এনটিআরসিএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
বদলি হওয়ার প্রক্রিয়া
প্রথমত, যেকোনো এমপিওভুক্ত শিক্ষক প্রথম যোগদানের পর চাকরি দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করতে পারবেন। এরপর বদলি হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ন্যূনতম দুই বছর চাকরি করার পরেই পরবর্তী বদলির জন্য আবেদন করা যাবে।
এনটিআরসিএ বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ে বদলির আবেদন করা যাবে, সারা বছর নয়। শিক্ষকরা অনলাইনে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বদলির জন্য আবেদন করবেন। নারী শিক্ষক-কর্মচারীরা স্বামী বা নিজের স্থায়ী ঠিকানায় বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
এনটিআরসিএ জানায়, নীতিমালা চূড়ান্ত করার পর দ্রুতই পরিপত্র জারি হবে এবং শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া শুরু হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন