রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সমন্বয়কদের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ নামে ১৮ সদস্যের প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবি সংসদের সাবেক তিন সমন্বয়ক।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়। প্যানেলের স্লোগান দেওয়া হয়েছে, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার, গণতন্ত্রের অঙ্গিকার’।
প্যানেলটিতে সহসভাপতি পদে লড়বেন সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে সালাউদ্দিন আম্মার ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে আকিল বিন তালেব।
প্যানেল ঘোষণার ব্যাপারে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা দল, মত, মতাদর্শের ঊর্ধ্বে গিয়ে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করব। স্বতন্ত্র জায়গা থেকে যারা যোগ্য, তাদের নিয়ে আমরা এই প্যানেল গঠন করার চেষ্টা করেছি। আগামীর ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক আবহ কেমন হবে, সেটা শিক্ষার্থীদের ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে।
প্যানেলে ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মো. ইয়াসিন আরাফাত বিজয়, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক মো. মনজু আরিফ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মো. মাহবুব আলম মোহন, মহিলা সম্পাদক পদে হেমা আক্তার ইভা, সহ-মহিলা সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসী তৃষা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে মো. মিনহাজুর রহমান, মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ফাহির আমিন, সহ-মিডিয়া সম্পাদক এম শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. জাকির হোসেন।
এ ছাড়া সহ-বিতর্ক সম্পাদক আরিয়ান আহমদ, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে আহসান হাবিব, সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে মোছা. ঈসিতা পারভীন তিথি। নির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাজ্জাদ হোসাইন, মো. আরিফুল ইসলাম, হাবিব হিমেল।
এ ছাড়া সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ৫টি পদে প্যানেল থেকে পাঁচ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই পাঁচ জন হলেন, মেহেদী সজীব, সালাউদ্দিন আম্মার, আকিল বিন তালেব, মো. জাকির হোসেন এবং আহসান হাবিব।
এই প্যানেল ছাত্রশিবিরের বি টিম হিসেবে গঠন করা হয়েছে বলে ক্যাম্পাসে গুঞ্জণ উঠেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘এটাকে ডামি বা বি টিম হিসেবে বলার কোনো সুযোগ আমি দেখছি না। তারা (ছাত্রশিবির) তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে প্যানেল গঠন করেছেন, আমরাও আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে প্যানেল গঠন করেছি। এটা একটা তুচ্ছ অজুহাত।’
এই প্যানেলে যারা আছে, তারা সবাই জুলাই যোদ্ধা। এখানে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল গঠন করা হয়েছে। এ জন্য ১৮ সদস্যের প্যানেল দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যোগ্য প্রার্থী পেলে প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আকিল বিন তালেব বলেন, ‘শুরু থেকেই বেশকিছু বিষয়ে আমাদের কাছে অসঙ্গতি মনে হয়েছে, আমরা সেগুলোর প্রতিবাদ করেছি। সম্প্রতি হলগুলোতে যেভাবে ব্যালট নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেটা নিয়ে বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি, কোনো একটি দলকে ব্যালটের এক নম্বর দেওয়া হয়েছে। ডোপ টেস্টের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের কথায় স্থির নয়। নির্বাচনের এখনো অনেক সময় আছে, এ সময়টিতে কমিশন তাদের সংগঠিত করে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে বলে আমরা আশা করি।’
[73762
এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী সজীব বলেন, ‘আমরা যে জার্নিতে নেমেছি, সেখানে আমরা জিতব, নয়তো শিখব। আমরা এখানে হেরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি দায়বদ্ধতা শেষ করতে আসিনি। আমরা দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে আসছি, আশা করি শিক্ষার্থীরা আমাদের বাছাই করবেন।’
তিনি আরও বলেন, এই আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকেই মূলত এখানে হাজির হয়েছি। শিক্ষার্থীরা যোগ্য মনে করলে ভোট দিবে, অন্যদের যোগ্য মনে করলে তাদের ভোট দিবে।
হল সংসদে প্যানেলের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক সহযোদ্ধা হলগুলোতে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন। হলগুলোতে আমরা প্যানেল না দিলেও ওই প্রার্থীদের প্রতি আমাদের সমর্থন থাকবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন