চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে চলছে ভোট গ্রহণ। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টার পর আর কাউকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে কেন্দ্রের ভেতরে যারা লাইনে থাকবেন তারা ৪টার পরেও ভোট দিতে পারবেন।
এ রিপোর্ট প্রকাশ পর্যন্ত আর মাত্র দেড়ঘণ্টা বাকি আছে ভোট প্রদান শেষ হওয়ার। বিপুলসংখ্যক ভোটার এ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। চাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই বলে দাবি করেন চাকসু নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইতোমধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রায় ৪৫ শতাংশের বেশি ভোট সংগ্রহ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে ভোটগ্রহণ নিয়ে প্রার্থীদের কেউ কেউ অভিযোগও করেছেন।
চাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মো. ইব্রাহীম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে। কিন্তু সেটি করা হয়নি। এ কালির মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটগ্রহণ খুবই ধীরগতিতে হচ্ছে। এ কারণে, আমরা জানতে পেরেছি, সমাজবিজ্ঞান অনুষদে কয়েকটা ভোট পড়েছে। শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে এসে ফিরে যাবে, এর চেয়ে দুঃখের বিষয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকতে পারে না।’
একই অভিযোগ ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেনের। তিনি বলেন, ‘ভোট শেষে ভোটারের আঙুলে দাগ দেওয়া হচ্ছে। তবে সে দাগ উঠে যাচ্ছে। এতে একজনের একাধিক ভোট দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কী কারণে এমনটা হচ্ছে তা আমরা জানতে চাই।’
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চাকসু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য সাধারণত জার্মানি থেকে অমোচনীয় কালি আনা হয়। নির্বাচনের পরে তা আবার ধ্বংসও করা হয়। ফলে অমোচনীয় কালি পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।’ এখন ভোটারদের আঙুলে সাধারণ মার্কার দিয়ে কালি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার।
আইটি অনুষদের ভোটকেন্দ্রে ১২টি স্বাক্ষর ছাড়া ব্যালট পাওয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এটি ভুলবশত হয়েছে। ১২টি ব্যালট আলাদা করে কেন্দ্রের দায়িত্বে যারা থাকবেন, তারা সই করবেন।’
সকাল ৯টা থেকে চাকসু ও হল সংসদের ভোটগ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও আধাঘণ্টা দেরিতে তা শুরু হয়। এ বিষয়ে অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘ভোটগ্রহণ সকাল ৯টার সময়েই শুরু হয়েছে। যদিও কোনো কোনো কেন্দ্রে ১০-১৫ মিনিট এদিক-সেদিক হয়েছে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিজ্ঞান অনুষদ কেন্দ্রের বাইরে স্থাপিত দুটি বড় স্ক্রিনে সরাসরি ভোটগ্রহণ কার্যক্রম উপভোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
চাকসু নির্বাচনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৭ জন। ভোটগ্রহণ চলছে পাঁচটি অনুষদের অধীনে ১৫টি কেন্দ্রে, যেখানে ৬০টি কক্ষে স্থাপিত ৬৮৯টি বুথে ভোট নেওয়া হচ্ছে ব্যালট পেপারে। গণনা করা হবে ওএমআর মেশিনে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৩টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন, আর হল ও হোস্টেল সংসদে ৪৯৩ জন প্রার্থী।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন