রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেন ও দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশনে বসেছেন দুই শিক্ষার্থী। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে আজ রবিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন। এ সময় আজ দুপুরে তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।
এদিকে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন, নাট্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদেক রহমান এবং তার সঙ্গে সংহতি জানান শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল।
এ সময় তারা ‘নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচি’, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই হবে একসাথে’, ‘জবাবদিহিতা নিশ্চিত কর’, ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’— এমন নানা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচিতে ফুয়াদ রাতুল বলেন, “নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের কলরেকর্ড প্রকাশ হওয়ার পরও প্রশাসন বিষয়টি ‘এআই-নির্মিত’ বলে ধামাচাপা দেয়। লিখিত পরীক্ষাতেও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। তদন্ত কমিটি নয়, এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেই আমরা কর্মসূচি থেকে ফিরে আসব।”
অনশনরত অন্য শিক্ষার্থী সাদেক রহমান বলেন, ‘শখ করে কেউ আমরণ অনশনে বসে না। যখন সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তখনই মানুষ এই পথ বেছে নেয়। আমরা মব সৃষ্টি করিনি, নিয়মের পথেই লড়াই করছি। দাবি পূরণ না হলে প্রশাসনকে আমাদের লাশের ওপর দিয়েই সিন্ডিকেট সভায় বসতে হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে তারা চার ঘণ্টা এবং শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) আট ঘণ্টার প্রতীকী অনশন পালন করেছিলেন।
শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে গতকাল উপস্থিত ছিলেন নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া ও সহযোগী অধ্যাপক কাজী সুষ্মিন আফসানা।
অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া বলেন, ‘অভিযোগ ওঠার পরও বিভাগের সভাপতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেননি। আমি প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মীর মেহবুবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে যেসব সংবাদ ও ফোনালাপের অডিও প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করেছে। ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম. আসাদুল হককে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্যসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন।
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
-Tower-in-Gopalganj-20251020201015.webp)
-20251020114155.webp)
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন