আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন ও স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা। প্যানেলগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে নির্বাচনি আমেজ।
বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, অনেক প্যানেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও ডাকসুর শীর্ষ তিন পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ, প্রতিরোধ পর্ষদ, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য এবং ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। কারণ, এসব প্যানেলের কমবেশি নিজস্ব ভোট রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রামের অনেক পরিচিত মুখ এসব প্যানেলে রয়েছেন।
ছাত্রদলের প্যানেলে ভিপি পদে মো. আবিদুল ইসলাম খান। জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম ও এজিএস পদে তানভীর আল হাদী মায়েদকে মনোনয়ন দিয়েছে ছাত্রদল। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরকে ভিপি ও আরেক সমন্বয়ক মো. আবু বাকের মজুমদারকে জিএস প্রার্থী করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যের ভিপি পদে লড়ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। জিএস পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন খান মাহমুদুল হাসান, আল সাদী ভূঁইয়া ও মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি। এজিএস পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাহেদ আহমেদ। এখনো তারা পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেনি।
বামপন্থি সাত ছাত্রসংগঠনের ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন শেখ তাসনিম আফরোজ। তিনি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্যানেল দিয়ে শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু।
অন্যদিকে, ছাত্রশিবির তাদের প্যানেলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একজন শিক্ষার্থীকে সদস্য পদে প্রার্থী করেছে। এ ছাড়া চারজন ছাত্রী তাদের প্যানেলে জায়গা পেয়েছেন। শিবিরের প্যানেলে আন্তর্জাতিক সম্পাদক প্রার্থী করা হয়েছে খান জসিমকে, তিনি জুলাই আন্দোলনে এক চোখ হারিয়েছেন। এ প্যানেল থেকে সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে একজন রাইসুল ইসলাম, তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।
আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ ক্যাম্পাসের আড্ডাস্থলগুলোতে এখন আলোচনার প্রধান বিষয় ডাকসু নির্বাচন। প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি, অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রম নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। জুলাই অভ্যুত্থানে প্রার্থীদের ভূমিকার বিষয়টিও আলোচিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগ শাসনামলের মতো গণরুম-গেস্টরুমের সংস্কৃতিতে আর ফিরতে চান না। তারা ছাত্র সংসদে এমন নেতৃত্ব চান, যারা শিক্ষার্থীদের সমস্যা-সংকট নিয়ে কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কিছুটা এগিয়ে রাখছেন শিক্ষার্থীরা। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক প্যানেলগুলোর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থীরাও থাকছেন শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায়।
উল্লেখ্য, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২৮ পদে মোট ৫০৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা ৬৫৮টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। সে হিসাবে ১৪৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। এবার প্যানেল ছাড়াও অনেকে ডাকসুর বিভিন্ন পদে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন