ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চবির উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
সংঘর্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। ছবি- সংগৃহীত।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা গত শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতে সংঘর্ষে রূপ নেয়, যা রোববার পর্যন্ত চলে। দুই দিনের সংঘর্ষে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন, এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার ও প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের পদত্যাগ দাবি করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। মিছিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

এ সময় তারা বলেন, যখন শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হচ্ছিল, তখন প্রশাসন নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিল, যা অমানবিক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। মিছিলে ‘আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে, প্রশাসন কী করে’, ‘উপাচার্য হায় হায়, নিরাপত্তার খবর নাই’, ‘দফা এক, দাবি এক- প্রশাসনের পদত্যাগ’—এই ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়।

ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা দিতে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’

সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘এই প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা আজ সম্পূর্ণভাবে অনিরাপদ, তাই তাদের পদত্যাগ করা উচিত।’

একই দিন বেলা ১১টায় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়াও আরও দাবি জানানো হয়- আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা ও এর সম্পূর্ণ ব্যয় প্রশাসনের বহন, হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসে ইলেকট্রনিক কার ও চক্রাকার বাস চালু, শতভাগ আবাসন নিশ্চিতে রোডম্যাপ ও ভাতা চালু এবং ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া। তিনি অভিযোগ করেন, উপাচার্য ও এক সহকারী প্রক্টর শিক্ষার্থীদের ওপরই দোষ চাপিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছেন।

ধ্রুব বড়ুয়া আরও বলেন, ‘২০২৩ সালে শাটল ট্রেন দুর্ঘটনার সময়ও প্রশাসন একই ধরনের দোষারোপ করেছিল, যা প্রমাণ করে- এই প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়। সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, সহসভাপতি উম্মে সাবা, প্রচার সম্পাদক মশ্রেফুল হক এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমাও উপস্থিত ছিলেন।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর মতে, উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ ছাড়া এই সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।