চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মামুন মিয়া ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত তিনদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মামুনের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায় তার মাথার ব্যান্ডেজে লেখা আছে, ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’।
চিকিৎসকরা জানান, মামুনের মাথার খুলি না থাকায় নরম অংশে কোনো চাপ পড়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হামলার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মামুনের মাথার পেছনে মারাত্মক আঘাত করা হয়। অস্ত্রোপচারে তার মাথা থেকে ১৩ টুকরো হাড় বের করা হয়েছে, যা ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা উন্নতি হলে দুই মাস পর এসব হাড় প্রতিস্থাপন করা হবে। এ ঘটনায় মামুনের নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয় এবং কানের পর্দাও ফেটে যায়।
মামুনের সহপাঠীরা জানিয়েছেন, তিনি এখন ইশারার মাধ্যমে কথা বলার চেষ্টা করছেন। সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল রানা বলেন, ওর অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। মাথার হাড় টুকরো টুকরো হয়ে ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধেছিল, এজন্য বড় অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মামুনের মাথার হাড়ের চেয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ঘরের টিনকে গুরুত্ব দিচ্ছে কিছু মিডিয়া।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিয়ান খান রাকিব বলেন, হাড় নেই, চাপ দেবেন না এই লেখাই প্রমাণ করে কতোটা নৃশংস হামলার শিকার হয়েছে মামুন। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) জিয়াউদ্দিন বলেন, তার চেতনা ফিরে এসেছে। এখন কেবিনে চিকিৎসা চলছে। মাথার খুলি খুলে সংরক্ষণ করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী এক-দুই মাস পর হাড় প্রতিস্থাপন করা হবে।