ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফল ঘিরে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঘোষণার আগেই নির্বাচনকে ‘পরিকল্পিত প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তবে একই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যদি এটাকেই তাদের রায় বলে মনে করেন, তবে সেই রায়কে তিনি সম্মান জানাচ্ছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে তারও আগে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আবিদ লেখেন, ‘পরিকল্পিত কারচুপির এই ফল দুপুরের পরপরই অনুমান করেছি। নিজেদের মতো করে সংখ্যা বসিয়ে নিন। এই পরিকল্পিত প্রহসন প্রত্যাখ্যান করলাম।’
এরও আগে রাতেই ভোট গণনার সময় কারচুপির অভিযোগ তুলে টিএসসিতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘যে ভোটের বাক্সগুলোকে খালি বলা হয়েছিল, পরে দেখা গেছে সেগুলো ব্যালটে ভর্তি। এই নির্বাচন কারচুপিতে হাসিনা নির্বাচনকেও ছাড়িয়ে গেছে।’
অন্যদিকে, ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম এক ভিন্ন অবস্থান থেকে কথা বলেন। রাত সোয়া ২টার দিকে তার ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন এটিই তাদের রায়, তবে এই রায়কে আমি সম্মান জানাই। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষায় আছি। ভোটগ্রহণ উৎসবমুখর হলেও গণনার সময় কিছু কেন্দ্রে অনিয়ম, যন্ত্রের ত্রুটি, জালিয়াতি ও কারচুপির ঘটনা ঘটেছে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আটটি কেন্দ্রে স্থাপিত ৮১০টি বুথে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট চলাকালে বিভিন্ন প্যানেল একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলে।
এদিকে, ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের দুই প্রার্থীর ব্যালটে আগে থেকে টিক দেওয়া ছিল বলে অভিযোগ তুলে টিএসসিতে বিক্ষোভ করে ছাত্রদল। একইভাবে রাতে ভোট গণনার সময় ‘খালি ব্যালটবক্স ভর্তি’ করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
নির্বাচনের দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশপথে সন্দেহজনকভাবে লোকজন জমায়েত হতে দেখা যায়। যদিও প্রশাসন তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি, তবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবির- উভয় পক্ষই দাবি করে, এসব লোক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, ‘নীলক্ষেত, শাহবাগ, চানখারপুলসহ আশপাশের এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়েছে।’
অন্যদিকে, শিবির-সমর্থিত জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ দাবি করেন, ‘নয়টি পয়েন্টে যুবদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে ভোটের পরিবেশকে প্রভাবিত করেছেন।’