জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস (৩১)। তার আকস্মিক মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
তবে শোকের মাঝেও নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম থেমে নেই। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশের কাজ অব্যাহত আছে। জাকসু নির্বাচনে প্রীতিলতা হলের পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস। দায়িত্বের তাগিদে দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
মরদেহ দুপুরে চারুকলা বিভাগে নেওয়া হলে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা শোকপ্রকাশের পাশাপাশি দাবি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে নির্বাচন কমিশনকে আরও দায়িত্বশীল হবে।
জাকসু নির্বাচনের কার্যনির্বাহী সদস্য প্রার্থী আনজুমান আরা বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে শোকাহত। দীর্ঘ সময় বিশ্রাম ছাড়া দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত কঠিন। আমাদের প্রিয় সহকর্মী ও শিক্ষিকা গতকাল সারা দিন প্রীতিলতা হলে দায়িত্বে ছিলেন। আমরা জানি না, এই অকালমৃত্যুর জন্য কাকে দায়ী করা উচিত।’
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন রুনু বলেন, ‘এক শিক্ষিকার মৃত্যু সরাসরি কমিশনের অদক্ষতা ও গাফিলতির দিকে ইঙ্গিত করে। আমরা মর্মাহত এবং চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আশা করি, ভবিষ্যতে তারা সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম জানান, রাতের বেলা ক্লান্তি ও পোলিং এজেন্টের অভাবে ভোট গণনার কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় জান্নাতুল ফেরদৌস সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তবে প্রীতিলতা হলের দরজায় এসে পড়ে যান। তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন এবং জাকসু নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার মৃত্যু শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ফলাফল প্রকাশের কাজ থামাননি। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীলতা ও প্রস্তুতির ওপরও প্রশ্ন তোলেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন