দেশে ফেরার পরই ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ জিয়াউল ফারুক অপূর্বর সঙ্গে তার ছেলে জায়ান ফারুক আয়াশের পুনর্মিলনের ভিডিও ঝড় তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গভীর ঘুম ভাঙতেই বাবাকে দেখে ছেলেটির কান্না-দৃশ্যটি যতটা আবেগঘন, ততটাই বিতর্কের জন্ম দেয়। ভিডিওর নিচে দেখা যায় ঢালাওভাবে নেটিজেনদের কটাক্ষ, কেউ বললেন বিচ্ছেদের পর বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আয়াশ, কেউ আবার আরও এগিয়ে গেলেন নানা মনগড়া ব্যাখ্যায়।

প্রথমেই অপূর্ব এক স্ট্যাটাসে জবাব দেন, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা প্রমাণের কোনো প্রয়োজন নেই, আর কারও সন্তানের জীবন কনটেন্ট বানানোও উচিত নয়। পরে তার সাবেক স্ত্রী নাজিয়া হাসান অদিতিও ক্ষোভে ফেসবুকে লেখেন, ছেলে তার কাছেই থাকে, ভালোবাসা ও যত্নে বড় হচ্ছে। কিন্তু তাতেও থেমে থাকেননি তিনি। কয়েক ঘন্টা পরেই ফেসবুক লাইভে এসে খোলাসা করলেন সব।

অদিতির ভাষায়, ‘আয়াশের জীবনে অপ্রাপ্তি আছে অবশ্যই। কারণ বাবা-মা একসঙ্গে না থাকাটা একটা অপ্রাপ্তি, যা আমাদের জন্যও যন্ত্রণাদায়ক। ডিভোর্সের পর আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি ওকে ভালো রাখার। দুই পরিবারই চায় ও কখনো নেগেটিভিটির মধ্যে না পড়ুক। কিন্তু একটা ভিডিও ক্লিপের কারণে হঠাৎ করেই ও এসবের মধ্যে এসে পড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, আয়াশ এসব জানেও না, বুঝেও না। সে খুব হ্যাপি কিড।’
আয়াশের মনস্তত্বের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আয়াশকে আমরা যতটুকু চিনি ও ছোটবেলা থেকেই একটু সফট প্রকৃতির, অনেক বেশি ইমোশনাল। তার মানে এই না যে সে সুখী নেই।’

আয়াশের হৃদয়ে সবার জন্যই অফুরন্ত ভালোবাসা- এ কথা বলতে গিয়ে অদিতি শোনালেন এক আবেগঘন স্মৃতি। জানান, একবার ভিয়েতনাম ভ্রমণে গিয়ে হঠাৎই হারিয়ে যায় আয়াশের ছোট বোন আমায়রা। মুহূর্তেই বোনের জন্য দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়ে আয়াশ, কান্নায় ভিজে যায় মুখ। উদ্বেগে কাঁদতে কাঁদতেই শেষ পর্যন্ত অজ্ঞান হয়ে যায় সে।
লাইভে অদিতি আরও জানান, জন্মের পর থেকেই আয়াশ তার সঙ্গেই থাকে, বাবাও তাকে গভীরভাবে ভালোবাসেন। ‘আমরা চেষ্টা করি, এক ছাদের নিচে না থেকেও ওকে সব রকম নেতিবাচকতা থেকে দূরে রাখার।’

সবশেষে অদিতির সরল স্বীকারোক্তি-‘আজ পর্যন্ত আয়াশ তার বাবার কাছ থেকে বা আমার কাছ থেকে কোনো অসম্মান দেখেনি, তাই দুজনকেই সমান ভালোবাসে। হয়তো মানুষের কাছে আমরা অপরাধী, কারণ আপনারা হয়তো আমাদের কাছ থেকে অন্যরকম সিদ্ধান্ত আশা করেছিলেন। তবে আয়াশ এখনও পর্যন্ত সৎ বাবা-সৎ মা এসব বোঝে না। হয়তো একদিন বুঝবে। কিন্তু আমরা চাই, সে যেন একজন ভালো মানুষ হয়ে বড় হয়।’

মায়ের এই খোলামেলা কথায় একদিকে ছেলের প্রতি অফুরান ভালোবাসার ছবি যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনি নেটিজেনদের প্রতি একরাশ প্রত্যাশার বার্তাও ছড়িয়ে পড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :