রূপে লাবণ্যে বাজিমাত করে বলিউডে আগমন তার। ফাল্গুনী পাঠকের হিট গান ‘ইয়াদ পিয়া কি আনে লাগি’-তে ঝলমলে লুক আর খুনশুটি ভরা হাসি দিয়ে রাতারাতি হার্টথ্রব হয়ে উঠেন। ২০০১-এর ‘স্টাইল’ সিনেমা তার ক্যারিয়ারে রকেটের গতি এনে দেয়—প্রযোজক-পরিচালকরা তখন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে, তাকে সই করানোর জন্য! দক্ষিণী ছবির দরজাও খুলে যায়, ম্যাগাজিন কাভারেও তিনি যেন নতুন সেনসেশন। বলিউডের সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রীদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন রিয়া সেন।
কিন্তু ২০০৫ সালে ঘটল সেই ‘অঘটন’, যেটা এখনও গসিপমহলে ‘বলিউডের সবচেয়ে হট স্ক্যান্ডাল’ নামে ফিসফিসিয়ে ঘুরে বেড়ায়। হঠাৎ করেই বিনোদন জগতে ছড়িয়ে পড়ল একটি ভিডিও। বলা হয় ভিডিওটি ছিল রিয়া আর তার তৎকালীন বয়ফ্রেন্ড অশমিত প্যাটেলের!
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিডিও হয়ে গেল ভাইরাল, মিডিয়া পাগলপ্রায়, আর সোশ্যাল সার্কেল সরগরম। রিয়া সঙ্গে সঙ্গেই অস্বীকার করলেন, ‘ভিডিওতে আমি নই’। কিন্তু আহা, গসিপ তো বাতাসের আগে ছড়ায়। তোলে চায়ের কাপে ঝড়, রিয়ার ক্যারিয়ারে সেই ঝড় আর থামেনি!
পরিণাম? একের পর এক বড় বাজেটের সিনেমা থেকে নাম কাটা, প্রযোজকদের ফোন বন্ধ, আর ক্যারিয়ারের সেই ঊর্ধ্বগতি আচমকা যেন স্থবির হয়ে দাঁড়ায়! ব্যক্তিগত জীবনেও টানাপোড়েন: মাত্র ১ বছরের মাথায় ২০০৬ সালে অশমিতের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি।
রিয়া পরে স্বীকার করেন, ‘সবাই যেন আমাকে ধরার অপেক্ষায় ছিল… এটা ভুলতে চাই।’ তবে পরিবারের অবিচল সমর্থনই তাকে সামলে তুলেছিল।
ঝড় থেমে গেলে রিয়া কিন্তু পুরো হারিয়ে যাননি। বিজ্ঞাপন, আঞ্চলিক ছবি, আর ওয়েব সিরিজে চুপিচুপি কামব্যাক—‘রাগিণী এমএমএস: রিটার্ন্স’, ‘পয়জন’, ‘মিসম্যাচ ২’, একের পর এক ডিজিটাল প্রজেক্টে আবারও হট অবতার। কিন্তু অভিষেকে যে প্রত্যাশা আর প্রমিজ দেখিয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত তার ধারে-কাছেও যেতে পারেননি সম্ভাবনাময়ী এই চিত্রনায়িকা।
২০১৭ সালের আগস্টে গোপনে বিয়ে করলেন শিবম তিওয়ারীকে—নেই মিডিয়ার হুল্লোড়, নেই রেড কার্পেট, যেন চুপিসারে নতুন অধ্যায় শুরু।
এখন? শুধু গ্ল্যামার নয়, ব্যবসাতেও হাত পাকাচ্ছেন। ২০২৫-এ কিনে ফেলেছেন ইউভা ন্যাশনাল ব্যাডমিন্টন লিগ-এর র্যাকেট রেইডার্স দল। তবু গসিপের বাজারে আজও কানে আসে, ‘আহা রিয়া! ভিডিও ফাঁস না হলে আজও হয়তো বলিউডের রানি হতেন।’