পাকিস্তানের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী হুমায়রা আসগর আলী মরদেহ গ্রহণ করেছে তার পরিবার। এর আগে, হুমাইরার মরদেহ নিতে পরিবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ জানান তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) লাহোরের ছিপা মর্গ থেকে অভিনেত্রীর দেহাবশেষ সংগ্রহ করেন তার ভাই নাভিদ আসগর।
করাচির অভিজাত ইত্তেহাদ কমার্শিয়াল এলাকায় ভাড়া ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন অভিনেত্রী হুমাইরা আসগর। গত কয়েক মাস ধরে ভাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। ফ্ল্যাটের মালিক একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী ফ্ল্যাটটি খালি করার জন্য গত মঙ্গলবার বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে পুলিশ সেখানে যায়। দরজায় কড়া নাড়ার পর সাড়া না পেয়ে পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং অভিনেত্রীর মরদেহ দেখতে পায়।
করাচি পুলিশ সার্জন ডা. সুমাইয়া সৈয়দের করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এক মাসের বেশি সময় আগে মৃত্যু হয়েছিল অভিনেত্রীর। তবে ফরেনসিক তদন্তে অনুমান, প্রায় ৯ মাস আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে মৃত্যু হয়েছে তার।
হুমাইরা আসগরের মরদেহের পরিস্থিতি বর্ণনা করে ডা. সুমাইয়া সৈয়দ বলেন, ‘ভিসেরা সম্পূর্ণরূপে অটোলাইজড। মরদেহ একটি কালো অচেনা বস্তুতে পরিণত হয়েছে।’
প্রথমদিকে পুলিশ জানিয়েছিল, হুমাইরার মরদেহ নিতে অস্বীকার করেছে তার পরিবার। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ধুর সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী সৈয়দ জুলফিকার আলী শাহ ঘোষণা করেন, প্রাদেশিক সরকার তার দাফনের ব্যবস্থা করবে। সিন্ধুর গভর্নর কামরান তেসোরিও অভিনেত্রীর দাফনে সহায়তার প্রস্তাব দেন।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হুমাইরার পরিবারের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিনেত্রীর ভাই নাভিদ আসগর।
তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি এবং সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে মরদেহ গ্রহণ করেছি।’
নাভিদ আসগর জানান, তার বোন সাত বছর আগে লাহোর থেকে করাচিতে চলে আসেন। পরিবারের সঙ্গে খুব কমই যোগাযোগ রাখতেন। প্রতি ছয় মাস পর পর বাড়িতে যেতেন। তবে গত প্রায় দেড় বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে তার কোনো ধরনের যোগাযোগ ছিল না। হুমাইরাকে খোঁজার অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তার ফোন বন্ধ ছিল। পরিবারকেও কখনো নিজের সঠিক ঠিকানা দেননি হুমাইরা। তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তারাও অভিনেত্রীর কোনো খোঁজ জানাতে পারেননি।
সংবাদমাধ্যমকে নাভিদ আসগর বলেন, ‘আমার মা বলেছিলেন, আমার মেয়ের এমন পচাগলা লাশ আমি দেখতে পারব না। ওকে বাড়িতে এনো না, ওখানেই (করাচিতে) দাফন করো। মিডিয়াকে আমার বাবা সেটাই বলেছিলেন। কিন্তু মিডিয়া এ বক্তব্যকে বিকৃত করে বলে দিয়েছে, আমরা নাকি তার মরদেহ নিতে চাই না! অথচ আমি কিন্তু এসেছি। বাবাই আমাকে পাঠিয়েছেন।’
হুমাইরার মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে, সেটা তদন্ত না করে পরিবার কেন অনুপস্থিত, তা নিয়ে একের পর এক রিপোর্ট করার জন্য সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করেন অভিনেত্রীর ভাই।
আপনার মতামত লিখুন :