রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম

কফিলেই কাহিল প্রবাসী শ্রমিকরা, কে এই কফিল?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম

কফিলেই কাহিল প্রবাসী শ্রমিকরা, কে এই কফিল?

বিদেশের মাটিতে কাজ করছেন প্রবাসী শ্রমিকরা । ছবি- সংগৃহীত

গত কয়েকদিন ধরে স্যোশাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু করেছে ‘কফিল’ শব্দটি, তৈরি হচ্ছে মিম আর ভিডিও। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এই কাফালা পদ্ধতি আর ‘কফিল’ শব্দটি।

কফিল কে?

‘কফিল’ মানে হলো নিয়োগকর্তা বা যার অধীনে একজন কাজ করেন। একজন কফিল একজন শ্রমিকের শুধু নিয়োগকর্তা নন ওই শ্রমিকের ভিসা, থাকার অনুমোদন বা রেসিডেন্স পারমিট থেকে শুরু করে সার্বিক বিষয়ে দেখভাল করেন। একজন কফিল ভালো না হলে একজন শ্রমিকের জীবন বিষিয়ে ওঠে। এ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যে কফিলের সাথে ঘনিষ্ঠ একদল লোক গড়ে উঠেছে যারা মালিকের পক্ষে শ্রমিকদের ওপর শোষণ চালায়। এরা কল-কারখানায় নতুন শ্রমিক এনে দেয়। মালিকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের জোড়ে এরা সাধারণ শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।

মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবস্থা

আমাদের আশপাশে অনেকেই আছেন, যাদের বাবা বা বড় ভাই কাজ করেন বিদেশে- বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে। তারা সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান বা বাহরাইনে যান জীবিকা খুঁজতে। তাদের পাঠানো টাকা দিয়ে পরিবার চলে, ভাই-বোনরা স্কুলে যায়, নতুন বাড়ি হয়। কিন্তু জানো কি, সেই পরদেশে তাদের জীবন কতটা কঠিন? তারা অনেক সময় দিনে ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করেন। রোদে-গরমে ঘেমে ভিজে যান, কিন্তু বিশ্রামের সুযোগ খুব কম। অনেকে ভালো মালিক পেলেও, অধিকাংশের ভাগ্যে জোটে ঠকানো, মারধর আর অবহেলা।

এই মানুষগুলো দেশের গর্ব হলেও বিদেশে তারা যেন নাম পরিচয়হীন একজন রোবট। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে, রক্ত-ঘাম পানি করে রোবটের মতো বিরামহীন কাজ করে যান ।

শ্রমিকরা কফিলদের ভয় পায়, কারণ কফিল চাইলে চাকরি চলে যেতে পারে। কেউ প্রতিবাদ করলে হয়তো দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি আসে। এমনকি অসুস্থ শ্রমিক বা মৃতদেহ দেশে আসতে কফিলের অনুমতি লাগে।

মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করা অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকের জীবনে ‘কফিল’ বিভীষিকার মতো। মধ্যপ্রাচ্যের কফিল বা কাফালা পদ্ধতি নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। এই কাফালা বা কফিল পদ্ধতির সংস্কারের আলাপ চলছে গত কয়েক বছর ধরে।

বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার আগে এসব বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতা দরকার। বিদেশে যাওয়া মানেই উন্নতি কিন্তু সেই উন্নতি হতে হবে শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসায়।

মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে করণীয়

প্রতি বছর লাখ লাখ বাংলাদেশি পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যে- ভালো একটা চাকরি আর পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু অনেকেই সেখানে গিয়ে পড়েন বিপদে, কারণ তাদের হাতে থাকে না প্রয়োজনীয় দক্ষতা বা কাজ শেখার অভিজ্ঞতা। ফলে ভালো বেতনের চাকরি মেলে না, আর শোষণের শিকার হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। এই সমস্যা কাটাতে দরকার শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানো।

বিদেশ যাওয়ার আগে তাদের উচিত পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ নেওয়া- যেমন ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, গাড়ি চালনা বা রন্ধনশিল্পের প্রশিক্ষণ। পাশাপাশি, আরবিতে মৌলিক কথা বলার মতো ভাষাজ্ঞান থাকলে কাজ পাওয়া সহজ হয় এবং খরচ ও প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

সরকারি পর্যায়ে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার, যেখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে। এ ছাড়া বিদেশে যাওয়ার আগে কাজের চুক্তি ভালোভাবে বোঝানো এবং শ্রম আইন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া উচিত।

সত্যিকার উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন আমাদের শ্রমিকরা বিদেশে গিয়ে শুধু কষ্ট করবেন না- নিজেদের দক্ষতায় গর্বের সঙ্গে কাজ করবেন। দক্ষতা শুধু রুটি এনে দেয় না, দেয় সম্মানও।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!