বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে রয়েছে মৌমাছি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরাগায়নকারী পোকামাকড়। এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা।
এই সংকট মোকাবিলায় বাগান, পার্ক কিংবা শহরের ছোট ছোট ফাঁকা জায়গায় পরাগায়নবান্ধব ফুল গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন অনেকে।
তবে কোন ধরনের ফুল গাছ এই পোকামাকড়ের জন্য উপযোগী—তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিভ্রান্তি ছিল। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল বোটানিক গার্ডেন ও ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম যৌথভাবে একটি গবেষণা পরিচালনা করে।
গবেষণার নেতৃত্বদানকারী অধ্যাপক নাতাশা দে ভেরে বলেন, ‘আমরা চাচ্ছিলাম এমন তথ্য-ভিত্তিক ফলাফল, যাতে মানুষ অনুমানের ভিত্তিতে নয় বরং বৈজ্ঞানিক সত্যের ওপর নির্ভর করে ফুল বেছে নিতে পারে।’
গবেষকেরা ৪০০টির বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, স্থানীয় ও বিদেশি ফুলের মিশ্রণ সবচেয়ে কার্যকর। এসব গাছ দীর্ঘ সময় ফুল ফোটায়, বেশি পরাগায়নকারী আকৃষ্ট করে এবং একইসঙ্গে মাটি সংরক্ষণে সহায়তা করে।
গবেষণায় শীর্ষে থাকা উপযোগী ফুলগুলো- ইয়্যারো (Yarrow), কর্নফ্লাওয়ার (Cornflower), কমন পপি (Common Poppy), গার্ডেন কসমস (Garden Cosmos), কর্ন মেরিগোল্ড (Corn Marigold), মরক্কোর টোডফ্ল্যাক্স (Moroccan Toadflax)।
এসব ফুল শুধু পরাগায়নকারী পোকাদের জন্যই আকর্ষণীয় নয়, বরং সাধারণ মানুষও এগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করেন। ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এগুলো দ্বিগুণ ভূমিকা রাখতে পারে।
অধ্যাপক দে ভেরে বলেন, ‘আমার বাড়ির পেছনের ছোট উঠানে আমি পরাগায়নবান্ধব গাছ লাগিয়েছি। এখন সেখানে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে, মৌমাছির গুঞ্জনে জায়গাটা ভরে উঠেছে। এটি সত্যিই একটি জীবন্ত পরিবেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছোট একটি বাগানও পরিবেশে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এ জন্য বাড়ির মালিক থেকে শুরু করে নগর পরিকল্পনাকারী—সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।’
আপনার মতামত লিখুন :