ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

পর্ন দেখার নেশা থেকে বেরিয়ে আসার উপায়

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের কৌতূহল প্রাচীন। সেই কৌতূহল কখনো কখনো পরিণত হয় অভ্যাসে, আর অভ্যাস থেকে তৈরি হতে পারে আসক্তি। 

আধুনিক প্রযুক্তির সহজলভ্যতা আর ইন্টারনেটের হাত ধরে নীল ছবির (পর্নোগ্রাফি) প্রতি এই আসক্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

অতিরিক্ত পর্ন দেখার ফলে অনেক সময় বাস্তবতা ও কল্পনার মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এর প্রভাব পড়ে ব্যক্তির যৌন দৃষ্টিভঙ্গি, সম্পর্ক এবং মানসিক স্বাস্থ্যে। অনেকেই মোবাইল বা কম্পিউটারের পর্দায় যা দেখেন, সেটাকেই যৌনতার একমাত্র রূপ মনে করতে শুরু করেন। এতে ব্যক্তিগত জীবনে জটিলতা তৈরি হতে পারে।

একজন সরকারি কর্মচারী বলেন, ‘গ্রাম থেকে শহরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসে প্রথম পর্নের সঙ্গে পরিচয় হয়। ধূমপান বা মদ্যপানের বদলে আমি পর্নে আসক্ত হয়ে পড়ি। চাকরিতে ঢুকে গেলেও কলেজ জীবনের সেই অভ্যাস ছাড়তে পারিনি। মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছি, কিন্তু কাউকে বলতেও পারছি না।’

আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ি। পড়াশোনার চাপে ক্লান্ত হয়ে গেলে পর্ন দেখি। এতে হয়তো পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে না, কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে দুশ্চিন্তা হয়। একবার তো মায়ের কাছে ধরা পড়তেও যাচ্ছিলাম। তখন বুঝি, বিষয়টা সহজ নয়।’

মনোবিদদের মতে, যারা নিজের সমস্যা বুঝতে পেরেছেন এবং মুক্তির পথ খুঁজছেন, তারা ইতোমধ্যে একটি বড় ধাপে পৌঁছেছেন। কারণ, অনেকেই সমস্যা থেকে পালিয়ে যান, কিন্তু কেউ কেউ নিজেকে দেখতে শুরু করেন এবং বদলাতে চান—সেটাই সবচেয়ে বড় আশা।

তাদের মতে, ‘যারা এসব থেকে মুক্তি পেতে চান, তারা বুঝতে পেরেছেন—পর্নোগ্রাফি ক্ষণিকের মানসিক চাপমুক্তির উপায় হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি ক্ষতিকর। জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠলেও সেটি যেন পুরো জীবনকে গ্রাস না করে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।’

মুক্তির উপায় কী হতে পারে?

বিশেষজ্ঞরা কিছু বাস্তবমুখী পরামর্শ দিয়েছেন—

-নিজের সময় এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা

-নির্দিষ্ট সময় স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা (ডিজিটাল ডিটক্স)

-অন্য কোনো সুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে মনোযোগ সরানো

-বন্ধুর বা পরামর্শদাতার সহায়তা নেওয়া

-প্রয়োজনে থেরাপিস্ট বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—নিজেকে দোষী না ভেবে, ধৈর্য ধরে আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় অটল থাকা। পরিবর্তন ধীরে হলেও তা সম্ভব।