শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:২৬ এএম

কোথা থেকে কীভাবে এল রসুন?

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:২৬ এএম

রসুন। ছবি - সংগৃহীত

রসুন। ছবি - সংগৃহীত

রসুন, সেই গন্ধে ভরা, স্বাদে সমৃদ্ধ কন্দ যা আজ আমাদের রান্নাঘরের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এক সময় উত্তর আমেরিকায় একেবারেই অচেনা ছিল। শত শত বছর ধরে রসুনের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় উত্তর আমেরিকায় জন্ম নিয়েছে, কিন্তু আজ আমরা যে রন্ধনসম্পর্কীয় স্বাদে রসুনকে চিনি, তা ১৭ শতকের আগে এই মহাদেশে পৌঁছায়নি। ইতিহাস বলে, ফরাসি, স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ অভিযাত্রীদের হাত ধরেই রসুন উত্তর আমেরিকায় প্রবেশ করেছিল।

কিন্তু সেই সময়ে রসুন ছিল সীমিত। পরিস্থিতি বদলায় ১৯২০-এর দশকে, যখন পোল্যান্ড, জার্মানি ও ইতালি থেকে আগত অভিবাসীরা রসুনের চাহিদা বাড়ায়। এরপর থেকে রসুন চাষ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আজ, ক্যালিফোর্নিয়ার গিলরয় শহর রসুন উৎপাদনে শীর্ষস্থানীয়, এবং শহরটিকেই এখন ‘রসুনের রাজধানী’ বলা হয়।

মধ্য এশিয়ার জন্মভূমি

গবেষণা জানায়, রসুন (Allium sativum L.) প্রথম আবির্ভূত হয়েছিল মধ্য এশিয়ার বন্য Allium longicuspis থেকে, প্রায় ৫০০০–৬০০০ বছর আগে। চীন ও কিরগিজস্তানের সীমান্তে তিয়েন শান পর্বতমালায় এই বন্য রসুন পাওয়া যায়। তবে, বিজ্ঞানীরা এখনো একমত নন- দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার কিছু প্রজাতিকেও আধুনিক রসুনের পূর্বপুরুষ বলে মনে করা হয়।

রসুনের গৃহপালন ও বৈশিষ্ট্য

প্রায় সব আজকের রসুনের জাত জীবাণুমুক্ত এবং হাতের মাধ্যমে বংশবিস্তার করতে হয়। এটি গৃহপালনের একটি ফল- কন্দের ওজন বৃদ্ধি, পাতার দৈর্ঘ্য হ্রাস, ছোট ঋতু এবং পরিবেশগত চাপের প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা, এসব বৈশিষ্ট্যই গৃহপালিত রসুনকে চিহ্নিত করে।

প্রাচীন ইতিহাস ও ব্যবহার

রসুনের প্রাচীনতম চিহ্ন পাওয়া যায় ইসরায়েলের আইন গেদি গুহা থেকে, প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালে। ব্রোঞ্জ যুগে, ফারাও চিওপসের সময় মিশরীয়রা রসুন খেত। ক্রিট দ্বীপের প্রাসাদগুলোতে খননকালে খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০–১৪০০ সালের মধ্যে রসুনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। চীনে অন্তত ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে রসুন ব্যবহৃত হচ্ছিল, আর সিন্ধু উপত্যকার হরপ্পা সভ্যতায়ও ২৬০০–২২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রসুন চাষের প্রমাণ মিলেছে।

সামাজিক ও ঔষধি প্রয়োগ

প্রাচীন সমাজে রসুন মূলত শ্রমিক শ্রেণীর জন্য এবং ঔষধি উদ্দেশ্যে ব্যবহার হতো। চীনা ও ভারতীয় চিকিৎসা গ্রন্থে রসুনের উপকারিতা যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস ও হজমে সহায়তা, কুষ্ঠ ও পরজীবী রোধের জন্য উল্লেখ রয়েছে। মধ্যযুগীয় ইউরোপে রসুনকে জাদুবিদ্যা, ভ্যাম্পায়ার ও রোগ প্রতিরোধের তাবিজ হিসেবেও ব্যবহৃত হত।

রসুনের দাম নিয়ে গুজব

একাধিক প্রচলিত কাহিনীতে বলা হয়, গিজার চিওপসের শ্রমিকদের জন্য রসুন অত্যন্ত ব্যয়বহুল ছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা- প্রাচীন শিলালিপিতে লেখা ছিল ‘রসুনের মতো গন্ধযুক্ত পাথর’, যা হেরোডোটাস ভুল বোঝেন।

রসুন শুধু স্বাদই বাড়ায় না, বরং ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে মানুষের সঙ্গে পথচলা করেছে। মধ্য এশিয়ার পর্বতমালা থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার মাঠ- রসুন এগিয়ে চলেছে, আজও আমাদের রন্ধন জীবনকে রঙিন করে।

Link copied!