ঢাকা শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

ঠান্ডার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৯:৪০ এএম
নিয়মিত কিছু সহজ ব্যায়াম করলে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় উপশম পাওয়া যায়। ছবি- সংগৃহীত

শীতকালে ঠান্ডা, সর্দি, কাশি থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ার মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখা ও ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে প্রাণায়াম অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে পদ্মাসন, সিদ্ধাসন বা সুখাসনে বসে নিয়মিত কিছু সহজ ব্যায়াম করলে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় উপশম পাওয়া যায়।

প্রাণায়াম করার পদ্ধতি

পদ্মাসন, সিদ্ধাসন বা সুখাসনে মেরুদণ্ড সোজা করে বসতে হবে। এবার ডান হাতের অনামিকা ও কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে নাকের বাম দিকে আলতো করে চেপে ছিদ্রপথ বন্ধ করতে হবে। ডান ছিদ্রপথে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং একইভাবে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে করুন পাঁচ মিনিট। এই প্রাণায়াম আমাদের দেহে উষ্ণ করে ও ওজন কমাতে সহায়তা করে।  

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণায়াম প্রতিদিন খালি পেটে সকাল-সন্ধ্যা এক মিনিট করেও যদি চর্চা করেন, তবুও আপনি বেঁচে যাবেন সামান্য ঠান্ডার সমস্যা থেকে। এটি হলো কপালভাতি প্রাণায়াম।

কপালভাতি প্রাণায়াম করার পদ্ধতি

খালি পেটে সিদ্ধাসনে বা পদ্মাসনে বসে দুই হাঁটুর ওপর দুই হাত ধ্যানমুদ্রায় রাখুন। এটা না জানলে এমনিতেই হাত দুটি দু’হাঁটুর ওপর রেখে সুখাসনে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা ও চোখ বন্ধ রেখে বুক ভরে শ্বাস নিন। এরপর সজোরে শ্বাস ছাড়ুন। নাকের ভেতর হঠাৎ ময়লা বা পোকা ঢুকে গেলে আমরা যেমন সজোরে শ্বাস ছাড়ি তাতে অবাঞ্ছিত বস্তুটাকে বের করতে চেষ্টা করি, সেভাবে সজোরে শ্বাস ছাড়তে হবে। এরপর আবারও শ্বাস নিন ফুসফুস ভরে। খেয়াল করুন আপনার পেট ফুলে কিছুটা উঁচু হয়ে উঠবে। এবার সজোরে শ্বাস ছাড়ুন। খেয়াল করুন আপনার পেট গভীরে ঢুকে যাবে এ সময়। সাবধান থাকতে হবে যে, শুধু শ্বাস ছাড়তে হবে সজোরে। কিন্তু নিতে হবে স্বাভাবিকভাবে।

শ্বাস নেওয়ার সময় কোনো সতর্কতা বা জোর খাটানোর প্রয়োজন নেই। ডায়াফ্রামের ক্রিয়ায় ফুসফুস এমনিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনীয় বায়ু ভেতরে টেনে নেয়। আপনার কাজ শুধু সজোরে ত্যাগ করা। আপনার মনোযোগ থাকবে শুধুমাত্র শ্বাস-প্রশ্বাসে।

যখনই আপনার কষ্ট অনুভব হবে, তখনই থেমে যাবেন। জোর করে প্রাণায়াম করবেন না। একটু বিশ্রাম নিন। তারপর আবার অনুশীলন করুন।

এ সময় আপনার মেরুদণ্ডের নিম্নভাগে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। একটু থামুন। বুক ভরে শ্বাস নেওয়া ও ত্যাগ করুন কয়েকবার। দেখবেন ব্যথা ঠিক হয়ে গেছে। তারপর আবার অনুশীলন করুন। এ সময় আপনার মুখমণ্ডল, কান, মাথা উষ্ণ হয়ে উঠবে। সারা শরীরে দারুণভাবে রক্তপ্রবাহ সঞ্চালিত হবে।

প্রাণায়াম শেষে চোখ বন্ধ রেখেই শরীরের মাঝে যে নির্মল অনুভূতি লাভ করবেন, কিছুক্ষণ সেটা উপভোগ করুন।  

এবার দুই হাতের তালু ঘষে তাপ উৎপন্ন করে চোখে-মুখে মেখে নিন। এই গোটা প্রক্রিয়া কমপক্ষে দুই মিনিট অনুশীলন করাই যথেষ্ট। তবে প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট করতে পারলে ভালো। অভ্যস্ত হয়ে গেলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত এটা প্রতিদিন অনুশীলন করতে হবে।

অসুস্থ শরীরে, গর্ভাবস্থায়, মাসিক চলাকালীন বা অস্ত্রোপচারের পর এ প্রাণায়াম করা যাবে না। এই কপালভাতি প্রাণায়ামের উপকারিতা অপরিসীম। এখন শুধু এতটুকু বলে রাখি, ঠান্ডাজনিত সমস্যা আপনার ধারে-কাছে আসবে না। নিয়মিত প্রাণায়াম ও যোগাভ্যাস করুন। জীবনকে উপভোগ করুন।