রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ০৩:১৪ পিএম

জিরা পানির উপকারিতা-অপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ০৩:১৪ পিএম

জিরা পানির উপকারিতা-অপকারিতা

জিরা পানি। ছবি: সংগৃহীত

রান্নায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মসলা হলো জিরা। জিরা শুধু খাবারের স্বাদ বা গন্ধই বাড়ায় না, পাশাপাশি স্বাস্থ্যেরও অনেক উপকার করে। কেননা জিরা তামা, আয়রন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, জিংক এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। জিরা খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও অনেক কিছু করে।

জিরা পানি একটি ভেষজ পানীয়ও বটে। বিভিন্ন অসুখের আরোগ্য সাধনে ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে জিরা পানি খুবই কার্যকরী। প্রতি একশ গ্রাম জিরায় থাকে ৩৭৫ ক্যালোরি। তাই প্রতিদিন এক গ্লাস জিরার পানি পান করলে স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে দারুণ উপকারী। স্বাস্থ্য সমস্যা ছাড়াও ত্বক এবং চুলের সমস্যার সমাধান করে জিরা পানি। তাই এই পানীয় প্রতিদিন খালি পেটে খাওয়া উচিত।

জিরা পানির উপকারিতা

১. হজমে সাহায্য করে: প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস জিরা পানি খাওয়া উচিত কারণ এটি এনজাইম উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে যা কার্বোহাইড্রেট, গ্লুকোজ এবং চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এটি হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং অন্যান্য বদহজম সমস্যার মধ্যে ডায়রিয়া, বমিভাব এবং গ্যাস ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।

২. টক্সিন দূর করে: জিরা পানিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে সুস্থভাবে কাজ চালাতে সাহায্য করে। আবার এটি লিভারের জন্যও বিশেষ উপকারী।

৩. অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করে: জিরার মধ্যে আয়রন রয়েছে, যা ইমিউন সিস্টেম ফাংশনে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস জিরা পানি পান করলে ৭% আয়রন পাওয়া যায়। জিরা পানিতে থাকে ভিটামিন এ এবং সি। যা শরীরকে যেকোনো সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

৪. অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় সাহায্য করে: জিরার মধ্যে উচ্চ পরিমাণে আয়রন থাকে। যা অ্যানিমিয়ার রোগীদের জন্য উপকারী। আয়রন ছাড়া শরীরে লোহিত রক্ত কনিকা তৈরি হতে পারে না। ফলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়।

৫. শ্বাসযন্ত্রের উন্নতি করে: জিরায় রয়েছে অ্যান্টি-কনজেসটিভ উপাদান। নিয়মিত এক গ্লাস জিরা পানি খেলে বুকের সমস্যার সমাধান হয়। আবার এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সর্দি কাশির জীবানুকে নষ্ট করে দেয়।

৬. ঘুমের মান উন্নত করে: জিরা পানি ইনসোমনিয়ার মতো সমস্যার সমাধান দিতে পারে। শুধু তাড়াতাড়ি ঘুমানোই নয়, বরং ঘুমের মানও উন্নত করে।
৭. স্মৃতিশক্তির মান উন্নত করে: জিরা মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তির মান উন্নত করতে সাহায্য করে।

৮. ত্বককে পরিষ্কার করে: জিরার মধ্যে ফাইবার এবং মুক্ত র‍্যাডিকেলের উপাদান রয়েছে। যা শরীরকে ডেটোক্সিফাই করতে সাহায্য করে এবং তাদের উপাদানকে নির্মূল করে। জিরা পানিতে থাকা মুক্ত র‍্যাডিক্যাল ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকে একটি প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেয়। এছাড়া এটি ব্রণ চিকিৎসারও একটি কার্যকর উপায়। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অকাল বার্ধক্য রোধ করতে সাহায্য করে এবং জিরা পানি ত্বককে সুন্দর রাখে।

জিরা পানির এত গুণ! | চ্যানেল আই অনলাইন

জিরা পানি খাওয়ার অপকারিতা:

জিরা খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হলেও, অতিরিক্ত পরিমাণে জিরা খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। নিচে অতিরিক্ত জিরা খাওয়ার বিভিন্ন অপকারিতা আলোচনা করা হলো:

১. হজম সমস্যা: অতিরিক্ত জিরা খাওয়ার ফলে হজম সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত জিরা খেলে পেটে ব্যথা, গ্যাস, পেট ফাঁপা, এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। জিরায় উপস্থিত তিক্ত উপাদানগুলো হজম প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্থ করতে পারে, যা পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি করে।

২. লো ব্লাড সুগার: জিরা রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জিরা উপকারী হতে পারে, তবে অতিরিক্ত জিরা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত কমে যেতে পারে, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়া) সৃষ্টি করতে পারে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৩. লো ব্লাড প্রেশার: জিরা রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক বা কম, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জিরা খেলে রক্তচাপ অত্যন্ত কমে যেতে পারে। ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৪. অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে জিরার প্রতি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। অ্যালার্জি হলে ত্বকে র‍্যাশ, শ্বাসকষ্ট, চোখে পানি আসা, এবং নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জিরা খাওয়ার পরে যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তবে তাৎক্ষণিক ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৫. লিভারের সমস্যা: অতিরিক্ত জিরা খেলে লিভারের উপর প্রভাব পড়তে পারে। জিরায় উপস্থিত কিছু উপাদান লিভারের কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে এবং লিভারের এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

৬. কিডনির সমস্যা: অতিরিক্ত জিরা খেলে কিডনির কার্যক্রমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। জিরায় উপস্থিত কিছু উপাদান কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে অতিরিক্ত জিরা খেলে কিডনির সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

৭. গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালীন সময়: গর্ভবতী মহিলাদের এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের অতিরিক্ত জিরা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। জিরা জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে, যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া স্তন্যদানকালীন সময়ে অতিরিক্ত জিরা খেলে শিশুর স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জিরা পানি খাওয়ার নিয়ম

জিরা পানি তৈরি করা বেশ সহজ। রাতভর এক মুঠো জিরা এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং বেশি সময় ধরে ভিজিয়ে রাখার ফলে জিরার বীজগুলো ফুলে উঠে এবং পানিতে বায়ো অ্যাকটিভ কম্পাউন্ড তৈরি করে। এই মিশ্রণটি প্রতিদিন সকালে পান করলে অল্প সময়ের ভেতরেই স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই যে পানীয় দিয়ে দিনটি শুরু করা উচিত তা হলো জিরা পানি। গরমের সময় পেটে গ্যাস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই সমস্যাটি সমাধানে জিরা পানিকে প্রাধান্য দিতে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

জিরা পানির রেসিপি

জিরা পানির জন্য প্রথমে ১ লিটার পানি, ২ চা-চামচ জিরাগুঁড়া, ২–৩ টেবিল চামচ তেঁতুলের মাড়(ঘন), আধা কাপ আখের গুড়, ১ চা-চামচ  বিটলবণ ও ১ চা-চামচ লবণ। উপকরণগুলো একসঙ্গে মিলিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে জিরা পানি। তবে লবণ, চিনি, টক নিজের স্বাদমতো কমবেশি করা যাবে।

আরবি/থিও

Link copied!