মরুর দেশের গুইসাপ গোত্রীয় প্রাণী সান্ডা। গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে ‘সান্ডা’ শব্দটি। সান্ডার পাশাপাশি আলোচনায় আসছে একটি পণ্যের নাম। তা হলো সান্ডার তেল।
সান্ডা প্রাণী থেকেই এই তেল তৈরি হয়। ভারতে এবং পাকিস্তানে এই তেল দীর্ঘদিন ধরে আয়ুর্বেদিক পণ্য হিসেবে বিক্রি হলেও বাংলাদেশে এটি এসেছে মূলত সামাজিক মাধ্যমে মার্কেটিংয়ের সূত্রপাতে।
গুঞ্জন আছে, এই তেল পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়ায়, লিঙ্গের আকার বড় করে, স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং যৌন দুর্বলতা দূর করে। আসলেই কি এসব সত্যি?
সান্ডার তেলের কার্যকারিতা নিয়ে বাস্তব তথ্য এবং বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খুবই সীমিত।
চলুন এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নিই-
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সান্ডার তেলের কার্যকারিতা প্রমাণের কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। ইউরোপীয় গবেষণা প্ল্যাটফর্ম রিসার্সগেটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পুরুষের লিঙ্গ ম্যাসাজের ক্ষেত্রে এই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে যৌন ক্ষমতা বা লিঙ্গের আকার বাড়ানোর মতো কার্যকর ক্ষমতা এর নেই। এটি কোনো অলৌকিক বা জাদুকরী উপাদান নয়।
বাজারে পাওয়া অনেক সান্ডার তেলে আসল উপাদান নেই। এই পণ্যের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো এর ভুয়া মার্কেটিং। অজানা পেজে অভিনেতা, চিকিৎসক বা ইউটিউবারের ছবি ব্যবহার করে বিক্রি বাড়ানো হয়।
সান্ডার তেলের উপকারিতার কোনো প্রমাণ তো নেই বরং কিছু কিছু মানুষের ত্বকে এই তেল ব্যবহারের পর অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর অনিয়ন্ত্রিতভাবে এই তেল ব্যবহারে ত্বকে জ্বালা, চুলকানি এমনকি দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি কাজ করে প্লেসেবো ইফেক্ট অর্থাৎ ব্যবহারকারী ভাবেন এটি কাজ করছে, ফলে কিছুটা মানসিক সন্তুষ্টি অনুভব করেন।
শুধু সান্ডার তেল নয়, কোনো ওষুধ বা তেলই শারীরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করলে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ব্যবহার করা উচিত নয়।
যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে কোনো তেল বা ওষুধ ব্যবহার না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আপনার মতামত লিখুন :