তিতা হলেও অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর প্রকৃতির অমূল্য উপহার।নিম গাছ শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র উপমহাদেশে পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এর পাতা, ডাল, ছাল, ফল সবই ওষুধি গুণে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে নিম পাতা খাওয়া বা এর রস পান করলে শরীরের ভেতর থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দূর হয়। যদিও স্বাদে তিতা, তবে এর ভেতর লুকিয়ে আছে স্বাস্থ্যরক্ষার এক অসাধারণ শক্তি।
নিম পাতা খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
নিম পাতায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণ শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ত্বক ভালো রাখে
নিয়মিত নিম পাতা খেলে শরীরের ভেতর থেকে রক্ত পরিশুদ্ধ হয়, ফলে ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি, দাগ-ছোপ কমে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
গবেষণায় দেখা গেছে, নিম পাতা শরীরে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
বদহজম ও পেটের সমস্যা কমায়
নিম পাতা খেলে হজমশক্তি বাড়ে এবং পেটের পরজীবী (কৃমি) বা ইনফেকশন দূর হয়। এতে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করে
নিম পাতার রস বা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে দাঁত ও মাড়ি শক্ত থাকে, মুখের দুর্গন্ধ কমে এবং দাঁতের নানা রোগের ঝুঁকি কমে।
লিভারের যত্নে সহায়ক
নিম পাতা লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, ফলে শরীরের বিষাক্ত উপাদান সহজে বের হয়ে যায়।
জ্বর কমাতে সাহায্য করে
নিম পাতা খেলে বা এর রস পান করলে ভাইরাসজনিত জ্বর, বিশেষ করে ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
নিম পাতা খাওয়ার কিছু প্রচলিত উপায়
সকালে খালি পেটে ৪-৫টি কাঁচা নিম পাতা চিবিয়ে খাওয়া।
নিম পাতার রস বের করে অল্প পরিমাণে পান করা।
শুকনো নিম পাতা গুঁড়ো করে পানিতে মিশিয়ে খাওয়া।
সতর্কতা
নিম পাতা অতিরিক্ত খেলে বমি, পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে।
গর্ভবতী নারীরা নিম পাতা বা এর রস চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না।
যারা নিমে অ্যালার্জিক, তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
নিম পাতা খাওয়া শরীরের ভেতর-বাইরের অসংখ্য রোগ প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। সংক্রমণ প্রতিরোধ, ত্বকের যত্ন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং লিভারের সুরক্ষায় নিম পাতার বিকল্প খুব কমই আছে। তবে এর তিতা স্বাদ ও কিছু সতর্কতা মাথায় রেখে নিয়মিত, পরিমিত এবং সঠিকভাবে নিম পাতা খেলে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখা সম্ভব।