লাল টসটসে এই সবজিতে যেমন রয়েছে অসাধারণ পুষ্টি, তেমনি অতিরিক্ত খাওয়ার ঝুঁকিও ভুলে গেলে চলবে না।টমেটো শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়ায় না, বরং এটি শরীরের জন্য দারুণ উপকারী এক ধরনের সবজি। অনেকে একে ফলও বলেন। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ উপাদান, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে ত্বক ও চোখের জন্যও দারুণ উপকারী। তবে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে খাওয়া হলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
টমেটোতে থাকা লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমাতে সহায়ক, বিশেষ করে প্রস্টেট, ফুসফুস ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
হার্টের জন্য উপকারী
টমেটোতে থাকা পটাশিয়াম ও লাইকোপিন হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ত্বক উজ্জ্বল রাখে
টমেটোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বলিরেখা কমায় এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।
চোখের জন্য ভালো
টমেটোতে থাকা বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
হজমে সহায়তা করে
টমেটোতে থাকা আঁশ ও পানি হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
টমেটোতে ক্যালোরি খুব কম থাকায় এটি ডায়েটের জন্য উপযোগী। এতে পেট ভরে কিন্তু ওজন বাড়ে না।
টমেটো খাওয়ার অপকারিতা
অ্যাসিডিটি ও পেটের সমস্যা
অতিরিক্ত টমেটো খেলে এতে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান পেটে অম্লতা, গ্যাস বা বদহজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি
টমেটোতে অক্সালেট ও ক্যালসিয়াম বেশি থাকায় অতিরিক্ত খেলে কিছু মানুষের কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে।
অ্যালার্জির সম্ভাবনা
কিছু মানুষের টমেটোতে অ্যালার্জি হতে পারে, এতে চুলকানি, ফুসকুড়ি বা গলা খুসখুসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আথ্রাইটিস বা জয়েন্টের ব্যথা বাড়াতে পারে
অনেক সময় অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ায় আথ্রাইটিস রোগীদের ব্যথা বা অস্বস্তি বাড়তে পারে, বিশেষ করে যাদের এই সমস্যার প্রতি সংবেদনশীলতা রয়েছে।
স্বাস্থ্যকরভাবে টমেটো খাওয়ার পরামর্শ
প্রতিদিন ১-২টি টমেটো খাওয়া নিরাপদ।
কাঁচা বা রান্না করে, দুইভাবেই খাওয়া যেতে পারে। রান্না করলে লাইকোপিন আরও ভালোভাবে শরীরে শোষিত হয়।
যারা পেটের সমস্যা বা কিডনির পাথরের ঝুঁকিতে আছেন, তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
পাকা, টাটকা ও কেমিক্যালমুক্ত টমেটো বেছে নেওয়া জরুরি।
টমেটো শুধু স্বাদ নয়, বরং শরীরের জন্য এক অসাধারণ পুষ্টির উৎস। রোগ প্রতিরোধ, ত্বকের যত্ন, হার্ট সুস্থ রাখা থেকে শুরু করে চোখের সুস্থতায় এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে অতিরিক্ত বা অসতর্কভাবে খাওয়া হলে তা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই টমেটো খেতে হবে পরিমিতভাবে ও সঠিকভাবে।