আজ ২২ জুলাই, মঙ্গলবার। ২৪ ঘণ্টার আগেই শেষ হবে আজকের দিন। ফলে বছরের দ্বিতীয় ছোট দিন অতিবাহিত করছে পৃথিবী। এই গ্রীষ্মে পৃথিবী দ্রুত ঘূর্ণায়মান হচ্ছে। এ কারণেই দিনগুলো কিছুটা ছোট হচ্ছে। বিজ্ঞানী ও সময় রক্ষকদের দৃষ্টি এখন আজকের সূর্যাস্ত এবং আগামীকালের সূর্যোদয়ের ওপর। খবর সিএননের।
আন্তর্জাতিক পৃথিবী ঘূর্ণন ও রেফারেন্স সিস্টেম পরিষেবা এবং মার্কিন নৌ-অবজারভেটরির তথ্য অনুসারে, ১০ জুলাই ছিল এখন পর্যন্ত বছরের সবচেয়ে ছোট দিন, যা ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ১.৩৬ মিলিসেকেন্ড কম স্থায়ী হয়েছিল। আজ ২২ জুলাই দ্বিতীয় ছোট দিন হতে যাচ্ছে। এরপর ৫ আগস্ট আরও একটি কম সময়ের দিনের সাক্ষী হতে পারে পৃথিবী।
আজকের দিনটি স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যতিক্রমী, যা ২৪ ঘণ্টার চেয়ে যথাক্রমে ১.৩৪ মিলিসেকেন্ড কম বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আর ৫ আগস্ট ১.২৫ মিলিসেকেন্ড কম স্থায়ী হতে পারে।
একটি দিনের দৈর্ঘ্য হলো গ্রহটির তার অক্ষের ওপর একটি পূর্ণ ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে তা। স্বাভাবিকভাবে ঘূর্ণনে গড়ে ২৪ ঘণ্টা বা ৮৬,৪০০ সেকেন্ড সময় লাগে; কিন্তু বাস্তবে চাঁদের মহাকর্ষীয় টান, বায়ুমণ্ডলে ঋতু পরিবর্তন এবং পৃথিবীর তরল কেন্দ্রের প্রভাবের মতো বিভিন্ন কারণে ঘূর্ণন কিছুটা অনিয়মিত হচ্ছে। ফলস্বরূপ, একটি পূর্ণ ঘূর্ণন সাধারণত ৮৬, ৪০০ সেকেন্ডেরও কম বা সামান্য বেশি সময় নেয়। মাত্র মিলিসেকেন্ডের অসংগতি হওয়ায় তা দৈনন্দিন জীবনে কোনো স্পষ্ট প্রভাব ফেলে না।
তবে এই অসংগতিগুলো দীর্ঘমেয়াদে কম্পিউটার, উপগ্রহ এবং টেলিযোগাযোগকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ ১৯৫৫ সালে প্রবর্তিত পারমাণবিক ঘড়ি ব্যবহার করে ক্ষুদ্রতম সময়ের বিচ্যুতিও ট্র্যাক করা হয়। কিছু বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন, এটি পৃথিবীকে সমস্যার দিকে ধাবিত করতে পারে। ফলে আরেকটু বিচ্যুতি আধুনিক সভ্যতাকে থামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
পারমাণবিক ঘড়িগুলো ২৪ ঘণ্টা সর্বোচ্চ নির্ভুলতার সঙ্গে গণনা করে। আধুনিক বিশ্ব এই সময়কে ‘সমন্বিত সর্বজনীন সময়’ বলে স্বীকৃতি দেয়।
আজকের দিনটির স্থায়িত্বের গরমিল মিলিসেকেন্ডের হিসাবে পরিমাপ হওয়ায় তা আমাদের অনুভূতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন গরমিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ধরুন, দিন ছোট হতে হতে তা মিনিটের গরমিলে পৌঁছাল বা ঘণ্টার ব্যবধান হয়ে গেল! তখন কী হবে? বদলে যাচ্ছে কি আমাদের চিরচেনা পৃথিবী?
আপনার মতামত লিখুন :