শীতের জনপ্রিয় খাবার হাঁসের মাংস। হাঁসের মাংস স্বাদে সমৃদ্ধ, প্রোটিনে উচ্চ এবং তেলযুক্ত হওয়ায় শরীরকে গরম রাখতেও সাহায্য করে। বিশেষ করে শীতের সময় শরীরের শক্তি ও তাপ বজায় রাখতে হাঁসের মাংস খুবই উপযোগী।
হাঁসের মাংসের পুষ্টিগুণ
হাঁসের মাংস প্রোটিনসমৃদ্ধ একটি খাবার। এতে রয়েছে—
- ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স (রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থায়ামিন, ভিটামিন বি৬)।
- আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম।
- প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৩০০ ক্যালরি।
হাঁসের মাংস শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং বহু উপকারিতার উৎস—বিশেষ করে যদি তা সঠিকভাবে এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হয়।
হাঁসের মাংসের উপকারিতা
প্রোটিনের ভালো উৎস : হাসের মাংস প্রোটিনে সমৃদ্ধ। প্রোটিন পেশি গঠন, কোষের পুনর্গঠন এবং শরীরের সাধারণ বৃদ্ধি ও শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ : এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেমন বি-৬, বি-১২, নিয়াসিন আছে, যা মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আয়রন ও জিঙ্কের ভালো উৎস।
হৃদয় সুস্থ রাখতে সহায়ক : হাঁসের মাংসের স্যাচুরেটেড চর্বি সাধারণ মাংসের তুলনায় বেশি হলেও হ্রাস করা পরিমাণে খেলে HDL বা ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক : যথাযথ পরিমাণে খেলে প্রোটিনের কারণে দীর্ঘ সময় পরিপূর্ণতার অনুভূতি দেয়, যা অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
যেকোনো খাবারের মতোই হাঁসের মাংসের কিছু অপকারিতা আছে। বিশেষ করে যখন তা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় বা শরীরের বিশেষ অবস্থায় তা গ্রহণ করা উচিত না।
হাঁসের মাংসের অপকারিতা
চর্বি বেশি : হাঁসের মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। অতিরিক্ত খেলে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, হৃদরোগ, ওজন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য মেটাবলিক সমস্যা হতে পারে।
উচ্চ ক্যালোরি : যারা ডায়েট বা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য এটি সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।
অতিরিক্ত তেলে রান্না করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি : ভাজা বা তৈলাক্ত রান্নার মাধ্যমে চর্বি ও ক্যালোরি আরও বৃদ্ধি পায়, যা হৃদরোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
সংক্রমণ ঝুঁকি : কাঁচা বা অপর্যাপ্ত তাপে রান্না করা হাঁসের মাংসে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা খাদ্যজনিত অসুখের কারণ হতে পারে।
কারা খেতে পারবেন
সাধারণ স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোর : যারা হৃদরোগ বা উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন না।
শরীর চর্চা বা পেশি বৃদ্ধি চাওয়া মানুষ : উচ্চ প্রোটিনের কারণে হাঁসের মাংস পেশী গঠনে সহায়ক।
হালকা ও নিয়মিত পরিমাণে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন যারা : প্রোটিনপূর্ণ ডায়েটে হাঁসের মাংস সহায়ক, তবে চর্বির মাত্রা খেয়াল রাখতে হবে।
কাদের খাওয়া এড়ানো বা সীমিত করা উচিত
হৃদরোগ বা উচ্চ কোলেস্টেরলের রোগী : হাঁসের মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি, যা কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে পারে।
বয়স্ক মানুষ যাদের হৃৎপিণ্ড সংক্রান্ত সমস্যা আছে : অতিরিক্ত চর্বি তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি সীমিত ডায়েটের মানুষ : ভাজা বা তেলযুক্ত হাঁসের মাংস ক্যালোরি বেশি।
গ্যাস্ট্রিক বা হজমজনিত সমস্যা আছে এমন মানুষ : চর্বি বেশি থাকায় হজমে সমস্যা হতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ছোট পরিমাণে দেওয়া উচিত : প্রাথমিকভাবে হালকা রান্না বা ভাপে দেওয়া নিরাপদ।

-20250503153709.webp)
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন