দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় আগামী শনিবার (১৫ জুন) সব সরকারি হাসপাতালে আলাদা করে কোভিড শয্যা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. মো. মঈনুল আহসান।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও আক্রান্ত রোগীদের জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আগামী শনিবারের মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কোভিড-১৯ রোগীর জন্য আলাদা শয্যা প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে জরুরি প্রস্তুতি হিসেবে হাসপাতালে শয্যা প্রস্তুতের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, ওষুধ ও চিকিৎসক-নার্সদের প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যু ঘটে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এবং সরকারিভাবে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে ২০২০ সালের ৮ মার্চ। একই বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ২৬ মার্চ ২০২০ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ওই সময় সেনাবাহিনীও মাঠে নামে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে। রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ এলাকায় প্রথম লকডাউন কার্যকর করা হয় ২৩ মার্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম দুই বছরে বাংলাদেশে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত ৩ লাখ ৩২ হাজার মানুষ মারা যায়, যা সরাসরি ও পরোক্ষভাবে করোনার কারণে।
করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিক্ষাখাত। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এই ৫৪৩ দিন শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দী ছিল, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
দীর্ঘ সময় স্বাভাবিক থাকার পর আবারও কোভিড-১৯ সংক্রমণের আশঙ্কাজনক প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।