ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মূল কেন্দ্রবিন্দিু হলো ‘পারমাণবিক বোমা’। ইরান যাতে কোনোভাবেই পারমাণবিক বোমা বানাতে না পারে সে চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। অপর দিকে অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ইরান তার পরমাণু কার্যক্রম খুব গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে উভয় দেশই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে ইসরায়েলের পক্ষে ইরানে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জুন) সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে ইরানকে ‘আনকন্ডিশনাল স্যারেন্ডার’ এর ইঙ্গিত দেন। এ ছাড়া মোসাদের কমিউনিটি গ্রুপের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা হয়, আজ (গতকাল) রাতে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে, যা সারা বিশ্ব মনে রাখবে। এমন নানা ধরণের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের কারণে অনেকেই পারমাণবিক হামলার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে- আমেরিকা যদি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে অংশ নেই, তবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। আর এ ঘটনায় পারমাণবিক বোমার ব্যবহারের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
একটি পারমাণবিক গোটা একটি শহর মুহূর্তে তছনছ করে দিতে পারে। তাই যদি কোনো দেশ পরমাণু হামলা করে, তা হলে বাঁচার জন্য খুব কম সময় ও সম্ভাবনা হাতে থাকে। এই সময়টাতে দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আসুন জেনে নিই পারমাণবিক হামলা হলে তাৎক্ষণিক কি করবেন। এর কারণে হয়তো আপনি পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে বেঁচেও যেতে পারেন-
বিস্ফোরণের পূর্বে:
# রেডিও বা টেলিভিশনে ঘোষণা শোনার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
# সরকারি নির্দেশাবলী মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং তা অনুসরণ করুন।
# একটি জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি কিট তৈরি রাখুন; যাতে শুকনো খাবার, পানি, প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস থাকে।
# যদি আপনার এলাকায় পারমাণবিক হামলার ঝুঁকি থাকে, তা হলে আপনার বাড়ির বেসমেন্ট বা মাটির নিচে আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
বিস্ফোরণের সময়:
# পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর, যত দ্রুত সম্ভব মাটির নিচে বা কোনো শক্তিশালী ভবনের কেন্দ্রে অবস্থান নিন। যদি সম্ভব হয় বাসার ফ্রিজ বা শক্ত কোনো প্লাস্টিকের/লোহার বাক্সে ঢুকে, ঢাকনা দিয়ে ঢেকে নিন।
# কোনো উঁচু ভবনের কেন্দ্রে আশ্রয় নিলে, বাহিরের দেয়াল এবং জানালা থেকে দূরে থাকুন। কাছাকাছি কোনো আশ্রয়স্থল না থাকলে, যেকোনো নিচু স্থানে; যেমন- নালা বা খাদে আশ্রয় নিন।
# বিস্ফোরণের পর রেডিয়েশন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই দূরে পালানোর চেষ্টা না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোনো বন্ধ ঘরে বা বাড়ির ভেতরে আশ্রয় নিন। বেসমেন্ট বা কংক্রিটের দেয়ালওয়ালা ঘর সবচেয়ে নিরাপদ।
# বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর, আপনার মাথা এবং ঘাড় ঢেকে রাখুন।
# যদি আপনি বাইরে থাকেন, তা হলে মাটিতে শুয়ে পড়ুন এবং আপনার মুখ ঢেকে নিন।
# ধুলোবালি থেকে বাঁচতে আপনার নাক এবং মুখ ঢেকে রাখুন।
বিস্ফোরণের পরে:
# রেডিয়েশনের মাত্রা প্রথম ২৪ ঘণ্টা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এই সময় বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন।
# আপনি যে কাপড় পরে আছেন, তাতে রেডিয়েশন লেগে থাকতে পারে। তাই দ্রুত কাপড় খুলে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে বন্ধ করে দিন। এই ব্যাগ মানুষ বা পশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
# সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করুন। তবে শরীর খুব জোরে ঘষবেন না। চোখ, নাক এবং কান পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
# যে খাবার বা পানি বাইরে খোলা ছিল, তা ব্যবহার করবেন না। বন্ধ বোতলের পানি বা প্যাকেটজাত খাবার গ্রহণ করুন।
# পারমাণবিক বোমা হামলার পর, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করুন। রেডিও বা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত খবর শুনুন এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকুন।
# অন্যদের সাহায্য করার চেষ্টা করুন, কিন্তু কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যাবেন না।
# পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর, গুজব এবং ভুল তথ্যে কান না দিয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করুন।
