বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম

বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিনহাকে সরানো হয়: শিশির মনির

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম

মোহাম্মদ শিশির মনির ও এস কে সিনহা। ছবি- সংগৃহীত

মোহাম্মদ শিশির মনির ও এস কে সিনহা। ছবি- সংগৃহীত

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ ও বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি বিষয়ক ঐতিহাসিক ‘মাসদার হোসেন’ মামলার রিভিউ শুনানিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ আদালতে তুলে ধরেছেন সংবিধান ও ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চে মামলার রিভিউ শুনানি শুরু হয়। 

শুনানির শুরুতেই শিশির মনির বলেন, ‘বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি ও বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত রায়কে কেন্দ্র করেই প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে অসুস্থ দেখিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ‘হেভিয়ার্স কপার্স’ মামলা করা হয়।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমার সিনিয়র, মরহুম অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সে সময় আদালতে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেছিলেন আমাদের প্রধান বিচারপতি কোথায়? কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ কোনো জবাব দিতে পারেনি।’

শিশির মনির অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার আদালতকে ব্যবহার করে নিজেদের মতো করে বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করেছে। 

তিনি বলেন, ‘এস কে সিনহা তার বই ‘ব্রোকেন ড্রিম’-এ এই বিষয়গুলো বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।’

এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ‘মাসদার হোসেন’ মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন, যা বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ভিত্তি গড়ে দেয়।

এ নির্দেশনায় বলা হয়, বিচার বিভাগকে অন্যান্য সিভিল সার্ভিসের সঙ্গে একত্র করা যাবে না। বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেটদের একসঙ্গে নিয়োগ সংবিধানবিরোধী। জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন দ্রুত গঠন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি জুডিশিয়াল সার্ভিসের চাকরির বিধিমালা প্রণয়ন করবেন। জুডিশিয়াল পে-কমিশন গঠনের নির্দেশনা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে। নিম্ন আদালতের বাজেট প্রণয়ন করবে সুপ্রিম কোর্ট। জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যরা প্রশাসনিক আদালতের আওতায় থাকবেন। বিচার বিভাগ পৃথককরণে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই, তবে করলে বাধা নেই। জুডিশিয়াল পে-কমিশনের সুপারিশ না আসা পর্যন্ত বর্তমান সুবিধা বহাল থাকবে। এই রায় ২০০৫ সালে আপিল বিভাগে বহাল থাকে।

শিশির মনিরের দাবি, ‘মাসদার হোসেন মামলার রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও তা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিচারপতি এস কে সিনহাকে অপসারণ করে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে আনার পথ সুগম করা হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বিচার বিভাগের সত্যিকারের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব।’

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ২০১৭ সালে অসুস্থতার অজুহাতে ছুটিতে গিয়ে বিদেশে অবস্থান নেন। এরপরই তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। পরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অবস্থায় বই প্রকাশ করে সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন।

মাসদার হোসেন মামলার রিভিউ শুনানির মধ্য দিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিচারপতিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকারের ভূমিকা। বিচারপতি সিনহার দেশত্যাগ, তার বিরুদ্ধে মামলা এবং শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নের প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে সর্বোচ্চ আদালতের ভেতরেই।

Link copied!