জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হওয়া স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ইমরান সোমবার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী।
এর আগের দিন, রোববার (৩ আগস্ট), মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ (২৩)।
তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ পাখির মতো গুলি চালিয়েছে। যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, তাদের জন্য শেখ হাসিনা, কামাল, কাদের, মামুন ও শামীম ওসমান দায়ী। আমি তাঁদের বিচার চাই।
খোকনের জবানবন্দিতে উঠে আসে, ‘২০২৪ সালের ১৮ ও ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় আমি আন্দোলনে অংশ নিই। ১৯ জুলাই ভূঁইগড় থেকে চাষাঢ়া যাওয়ার সময় বিজিবি-পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। আমার সামনেই একজনের বুকে গুলি লেগে পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। সে তাৎক্ষণিক মারা যায়।’
তিনি আরও জানান, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনের সময় পুলিশ গুলি চালায়। এক ব্যক্তির মাথায় গুলি ঢুকে অন্যজন আহত হয়। রক্ত ঝরছিল এমনভাবে, যেন গরু জবাই করা হয়েছে। সেনাবাহিনী এসে পুলিশকে সরিয়ে দিলে একটু শান্তি আসে। পরে পুলিশ আবার এসে পাখির মতো গুলি চালায়। আমি ও কয়েকজন ফ্লাইওভারের নিচে পিলারের পেছনে পালাই।
আদালতে নিজের মুখ দেখিয়ে খোকন বলেন, ‘গুলিতে আমার চোখ, নাক ও মুখ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।’ পরে সহযোদ্ধারা তাকে মুগদা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল, মিরপুর ডেন্টাল ও বার্ন ইনস্টিটিউট হয়ে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ায় চিকিৎসার জন্য পাঠান।
সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চাই।’ এরপর চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম মামলার সূচনা বক্তব্য দেন। বিচার কার্যক্রমের সূচনা সরাসরি সম্প্রচার হলেও নিরাপত্তার কারণে সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকালে সম্প্রচার বন্ধ রাখা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :