নারায়ণগঞ্জের আলোচিত তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। শিগগিরই মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে র্যাব-১১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ যাচাই-বাছাই করে দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
এর আগে গত ১ অক্টোবর র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুড়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ত্বকী হত্যা মামলার পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪০)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে টানা ২২ দিন অভিযান চালিয়ে আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক মো. জামশেদসহ তার ছয় সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর মধ্যে আজমেরী ওসমানের সহযোগী কাজল হাওলাদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য দুই আসামি শাফায়েত হোসেন (শিপন) ও মামুন মিয়াকে দুই দফায় মোট ৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জামশেদকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে শহরের কালীরবাজারের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন এ লেভেল পরীক্ষায় রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বিশ্বের সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনি খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি অভিযোগ করেন, তৎকালীন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্দেশে তার ছেলে অপহরণ ও হত্যার শিকার হন। তিনি দাবি করেন, শামীমের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে নিয়ে ত্বকীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের একজন শওকত সুলতান জানায়, ১১ জন ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়, যার মধ্যে ওসমান পরিবার সংশ্লিষ্ট ছিল। র্যাব ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে একাধিক অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামতও উদ্ধার করে।
রফিউর রাব্বির দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শামীম ওসমান পরিবার জড়িত থাকায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মামলার তদন্ত স্থগিত করা হয়েছিল।
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া নতুনভাবে শুরু হওয়ায় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ত্বকীর বাবা। তিনি বলেন, এই হত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হলে একটি নির্ভুল অভিযোগপত্র প্রয়োজন। নির্দেশদাতা শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান ও শাহ নিজামসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্তের প্রতিটি ধাপের তথ্য যাচাই শেষে চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন