রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সাক্ষ্যগ্রহণের ১২তম দিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জন আসামি রয়েছেন।
বুধবার (১২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন। এদিন একজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) মামলার ১৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ। তিনি ছিলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম ও সুলতান মাহমুদসহ অন্যরা।
এর আগে ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী ও বেরোবি শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান। তিনি ছিলেন মামলার ১২ নম্বর সাক্ষী। তার জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ উঠে আসে।
মামলায় গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিক ও রায়হানুল রাজ দুলাল সাক্ষ্য দেন। এরও আগে ২৯ সেপ্টেম্বর অষ্টম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে তিনজন সাক্ষী জবানবন্দি দেন।
গত ২৮ আগস্ট মামলার প্রথম দিনে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ওই দিন সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।
বর্তমানে মামলার ছয়জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। এদের উপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম উদ্বোধনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর আগে ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
তবে মামলার আসামিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক। তাদের পক্ষে সরকারিভাবে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৪ জুন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা, এবং ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগপত্র আমলে নেয়। মামলায় মোট সাক্ষী আছেন ৬২ জন।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন