ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বারভিডা’র নির্বাচনের প্রস্তুতি

বিশেষ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন’ (বারভিডা)’র বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সাত দিনের মধ্যে এটি নিষ্পত্তি করার জন্য আদালত নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না সংশ্লষ্টরা। উল্টো ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাদের বহাল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নির্দেশের কপি পাওয়ার পর ২৩ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায়-এ বিষয়ে শুনানির আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠনের মহাসচিবের কক্ষে এ বিষয়ে শুনানি করা হবে বলে এক চিঠিতে জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী সচিব পলক কুমার মণ্ডল। গেল ১১ ডিসেম্বর এই চিঠি ইস্যু করা হয়। অথচ ২৩ ডিসেম্বরের আগে ২১ ডিসেম্বর বারবিডার নির্বাচন সম্পন্ন হবে। ভুক্তভোগীরা মনে করছেন মহামান্য আদালতের প্রতি এটি এক ধরণের তামাশা।

গত ১ নভেম্বর  রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সংগঠনটির সদস্য মোহামম্মাদ দিনুল ইসলাম। এই আবেদনের শুনানী শেষে গেল ৯ ডিসেম্বর ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হেসেন চৌধুরী ও কে.এম রাশেদুজ্জামান রাজার দ্বৈত বেঞ্চ। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বারভিডার সদস্যদের মধ্যে।

সংগঠনটির সদস্যদের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে বারভিডায় চলছে নির্বাচনের ব্যাপক প্রস্তুতি। ২০২৪-২০২৬ নির্বাচনে স্বৈরাচারের দোসররা প্রার্থী হয়েছেন। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিরোধী ও ছাত্র হত্যা মামলার আসামিও এতে প্রার্থী হয়েছেন। বারভিডার সদস্যদের অভিযোগ, বেআইনীভাবে এই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশন বাতিল করে বারভিডায় নতুন প্রশাসক নিয়োগ করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি তাদের। বর্তমান নির্বাচন কমিশন মেয়াদোত্তীর্ণ বলে জানান তারা।

বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর অন্তত পাচঁটি চিঠি দিয়েছেন বারভিডার সদস্যরা। এসব চিঠিতে উল্লেখ কররা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৯ জুন বারভিডার ২০২২-২০২৪ দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট, জেনারেল সেক্রেটারী, ভাইস প্রসিডেন্টসহ ১৩ টি পদের পরিচালিনা পরিষদসহ বাকী ১২ জন নির্বাচিত সদস্যের সমন্বয়ে মোট ২৫ জনের কমিটি গঠিত হয়।

বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ধারা ১৪ এর বিধান অনুযায়ী এর মেয়াদ শেষ হয় গত ২৮ জুন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সংগঠনের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে বে-আইনীভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি করে এবং সহকারী প্রশাসক নিয়োগ না করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তিন দফায় মোট আট মাস মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। যা বাণিজ্য সংগঠন আইনের পরিপন্থি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি।