টানা ১৫ বছর শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথমদিনে উৎসব করে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেড় দশক পর এবার ভাটা পড়েছে সেই রীতিতে। অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার বাতিল করেছে বই উৎসব। তাছাড়া রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও বই ছাপার কাজ দেরিতে শুরু করায় সব বই ছাপাও শেষ করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে নতুন বছরের প্রথম মাস শেষ হলেও সব বই পায়নি শিক্ষার্থীরা।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বই পেয়েছে প্রথম থেকে তৃতীয় ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই চার শ্রেণির বইয়ের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ বইয়ের কাজ শেষ। সবচেয়ে পিছিয়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি। তাদের মাত্র ৩৪ শতাংশ বইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ এই চার শ্রেণির ৬৬ শতাংশ বইয়ের কাজই বাকি বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে, সব বইয়ের কাজ শেষ হতে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে প্রেস মালিকরা জানিয়েছেন। তবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীরা সব পাঠ্যবই হাতে পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
সম্প্রতি তিনি বলেন,‘প্রথম দিকে আমরা আর্ট পেপার পাচ্ছিলাম না। কাগজের সংকটও ছিল। পরে ছাত্র প্রতিনিধি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যদের সহায়তায় সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। আমাদের প্রেসগুলোতে দিনরাত কাজ হচ্ছে। আমরা গত বছরের শেষ দিকে একসঙ্গে সব ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি। আবার বাজারে কাগজের সংকট রয়েছে। ফলে এর চেয়ে গতি বাড়ানোর সুযোগ আমাদের ছিল না। তবে মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি থেকে আমাদের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বইয়ের কাজ শেষ করতে বলেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এর পরও মনে হচ্ছে, সব বইয়ের কাজ শেষ হতে আরো কিছু দিন সময় লাগবে।’
এনসিটিবি সূত্র জানায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী সংখ্যা চার কোটি ৩৪ লাখ তিন হাজার ২৮৩ জন। তাদের জন্য ছাপা হচ্ছে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই। প্রাথমিকের দুই কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই। মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হচ্ছে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি বই। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি ব্রেইল বই ছাপা হচ্ছে। শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা ছাপা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এনসিটিবি সবচেয়ে বেশি অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে ছাপার কাগজ নিয়ে। চাহিদামতো ৪০ কোটি বই ছাপাতে কত হাজার টন কাগজ প্রয়োজন এবং দেশে কাগজের এই সক্ষমতা আছে কি না সেটা তারা বিবেচনায় নেয়নি। ফলে ছাপাখানাগুলো একসঙ্গে কাজ শুরু করতে গেলে কাগজের সংকট দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রেও এনসিটিবি দায় চাপায় প্রেস মালিকসহ অন্যদের ওপর। আবার বই পরিমার্জন ও দরপত্র প্রক্রিয়ায়ও বেশি সময় নিয়েছে এনসিটিবি। ফলে নতুন বছরের প্রথম মাস শেষ হলেও এখনো অর্ধেক বইয়ের কাজই বাকি রয়েছে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন