ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি এর পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ শব্দ ব্যবহারের আহ্বান জানান।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে ডেইলি স্টার ভবনে ‘হেল্প’ অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই অ্যাপ চালু করা হয়েছে, যা গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমি দুটি শব্দ খুব অপছন্দ করি, তার মধ্যে একটি হলো ‘ধর্ষণ’। গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ করব, এই শব্দটি ব্যবহার না করে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নিপীড়ন’ বলার জন্য। আমাদের আইনেও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন’ বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, যেসব ঘটনা জনমনে আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে, তা বারবার প্রচার না করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, “ধর্ষণের ঘটনা কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি পুরো দেশের ইস্যু। একটি মেয়ে ধর্ষিত হলে পুরো দেশ ধর্ষিত হয়। এ ধরনের অপরাধ রোধে কমিউনিটির সম্পৃক্ততা জরুরি।”
সুইচ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মাইনুল আহসান ফয়সাল জানান, “গণপরিবহনে ৬৪ শতাংশ নারী বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হন। এসব কমাতেই ‘হেল্প’ অ্যাপ চালু করা হয়েছে।”
‘হেল্প’ অ্যাপ: নারীদের সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ
HELP (Harassment Elimination Literacy Program) একটি মোবাইল অ্যাপভিত্তিক প্রকল্প, যা গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি শুধু স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নারীরা গণপরিবহনে চলাচলের সময় যেকোনো হয়রানির শিকার হলে তাৎক্ষণিক সহায়তা চাইতে পারবেন, জরুরি সেবা নিতে পারবেন এবং ঘটনাটি রিপোর্ট করতে পারবেন।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই সেবাটি ঢাকার বসিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে চালু করা হবে। তবে সীমিত আকারে দেশের অন্যান্য স্থান থেকেও নারীরা এটি ব্যবহার করতে পারবেন। নির্দিষ্ট বাসে কিউআর কোড স্থাপন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।
অ্যাপটির মাধ্যমে ৯৯৯, নিকটবর্তী থানা, ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার, ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়া, জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিতের ব্যবস্থাও থাকবে।
অনুষ্ঠানে বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক বলেন, “ধর্ষণ শব্দের পরিবর্তে কী ব্যবহার করা যেতে পারে, তা নিয়ে ভাবা দরকার। নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সলিউশন স্পিনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল সালেহ, বিজেসির সদস্য সচিব ইলিয়াস হোসেন, ট্রেজারার মানস ঘোষ, ট্রাস্টি নূর সাফা জুলহাজ ও তালাত মামুন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল নাইনটিনের সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

 
                             
                                    

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031160223.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন